ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার (১৯ এপ্রিল)। তার দু’দিন আগেই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করলো মমতা ব্যানার্জীর দল তৃণমূল কংগ্ৰেস।
বুধবার কলকাতায় দলীয় সদর দপ্তরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রাউন, বর্তমান অর্থপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার প্রকাশ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু, নেপালি, সাঁওতালি (অলচিকি)- এই ছয়টি ভাষায় ইশতেহার প্রকাশ করেছে তৃণমূল। তাদের এবারের ইশতেহারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিদির ১০ শপথ’। এতে বিনামূল্যে রেশন, বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার, সিএএ কার্যকর না করা, দৈনিক নূন্যতম মজুরি থেকে স্বাস্থ্যবিমার সুবিধার মতো নানা প্রতিশ্রুতি রয়েছে ইশতেহারে।
এদিন সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, নির্বাচনী ইশেতাহার আসলে দিদির শপথ। মমতা ব্যানার্জী দেশের মানুষকে যে যে প্রতিশ্রুতি দেবেন, তা পূরণ করার শপথ নিয়েছে তৃণমূল। কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সরকার গঠন করার সঙ্গে সঙ্গেই সব প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ভারতের সব কৃষকের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদানের আইনত গ্যারান্টি দেওয়া হবে। সব ফসলের দাম উৎপাদনের গড় খরচের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি ধার্য করা হবে।
স্বচ্ছ আইন করা হবে, সিএএ বিলুপ্ত করা হবে, এনআরসি বন্ধ করা হবে, ইউসিসি দেশজুড়ে প্রয়োগ করা হবে না।
জ্বালানির জ্বালা কমবে, দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে বছরে ১০টি গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হবে।
মমতা ব্যানার্জীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে, বর্ধিত আয় শ্রমিকের সহায়ক। সব জব কার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়া হবে। ৪০০ রুপি করে মজুরি দেওয়া হবে দেশজুড়ে।
প্রতি মাসে প্রত্যেক রেশন কার্ডে পাঁচ কেজি করে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। নিরাপত্তা বাড়বে সবার, উচ্চশিক্ষায় বৃত্তি বাড়ানো হবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যুবকদের, তপশিলি জাতি ও উপজাতি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য উচ্চশিক্ষায় বৃত্তি বাড়ানো হবে। সারাদেশে ৬০ বছর বয়সীদের বার্ধক্য ভাতা বাড়িয়ে বার্ষিক ১২ হাজার রুপি করা হবে।
স্বল্পমূল্যে পেট্রোপণ্য মিলবে, মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দাম ওঠানামা করার জন্য ‘প্রাইস স্টেবিলাইজেশন ফান্ড’ তৈরি করা হবে গোটা দেশে।
২৫ বছর পর্যন্ত সব স্নাতক ও ডিপ্লোমা হোল্ডারদের দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বাড়াতে এক বছরের শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক দৃঢ়তা দেওয়ার জন্য মাসিক বৃত্তি প্রদান করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এককালীন ২৫ হাজার রুপি দেওয়া হবে। আয়ুষ্মান ভারতের বদলে উন্নতর স্বাস্থ্য সাথী বিমা প্রদান করা হবে, যা ১০ লাখের স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা দেবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।