আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৮ জন সরকারি কর্মকর্তা। গত রোববারের এ দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তবে এর নেপথ্যে আরও কিছু কারণ নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ সম্পর্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) বলছে, উঁচু পার্বত্য এলাকা ও গভীর উপত্যকার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় পাইলট বিভ্রান্ত হতে পারেন। ইএএসএ বলছে, গভীর উপত্যকায় বাতাসের গতি ও দিক আচমকা অপ্রত্যাশিতভাবে পাল্টে যেতে পারে। এ কারণে বাতাসের গতি উল্লেখ করার মতো ওঠানামা করতে পারে। এতে করে অনেক সময় হেলিকপ্টারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন পাইলট। এছাড়া এসব জায়গা দিয়ে চলাচলের সময় কুয়াশা অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি বিষয়।
তবে কাইল বেইলি নামের একজন বেসামরিক বিমান পরিবহনবিশেষজ্ঞ বলেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলটরা সহায়তা চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। ফলে কোনো সন্দেহ নেই যে যান্ত্রিক ক্রটির কারণেই হেলিকপ্টারটি নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যার মুখে পড়েছিলেন তারা। কাইল বেইলি আরও বলেন, আকাশে থাকতে যান্ত্রিক সমস্যার মুখে পড়লে পাইলটের প্রথম কাজ হেলিকপ্টার আকাশে ভাসিয়ে রাখা। এরপরে সহায়তার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা। তবে তার আগেই হয়তো হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। অবশ্য বৈরী আবহাওয়ার কারণেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী ওই হেলিকপ্টারটি ছিল বেল-২১২ মডেলের। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই হেলিকপ্টার ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের আগে কিনেছিল তেহরান। সে হিসাবে এটি বেশ পুরোনো। এর আগেও একবার ইরানে এই মডেলের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। হেলিকপ্টারটি অনেক পুরনো মডেলের হওয়াকেও অন্যতম কারণ বলেও মনে করছেন এই বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানে অসংখ্য বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব বিমানের প্রায় সবই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। সুইজারল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক ব্যুরো অব এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট আর্কাইভসের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইরানের ২৫৩টি বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৩৩৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।