গত ১৩ বছরে বিশ্বের ১০০টি দেশে প্রায় ৪০ কোটি শিশু বাসগৃহে ভয়াবহ শারীরিক/মানসিক শাস্তির শিকার হয়েছে। এসব শিশুর অধিকাংশের বয়স সর্বোচ্চ ৫ বছর।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনিসেফ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৪০ কোটি শিশুর মধ্যে একাধিকবার শারীরিক শাস্তি বা প্রহারের শিকার হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি শিশু, বাকিরা শিকার হয়েছে মানসিক শাস্তির।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশের বয়স সর্বোচ্চ ৫ বছর। ইউনিসেফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, শিশুদের সঙ্গে ধমকের সুরে চিৎকার বা উচ্চস্বরে কথা বলা, তাদেরকে গালাগাল করা মানসিক শাস্তি প্রদানের শামিল।
বিশ্বের অনেক দেশেই শিশুদেরকে প্রহার করা আইনত নিষিদ্ধ। তবে ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি শিশু যে কোনো সময় প্রহারের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এসব শিশুর মধ্যে এমন বহু দেশের শিশু রয়েছে, যেসব দেশে শিশুদের প্রহার বা শারীরিক শাস্তি দেওয়া নিষিদ্ধ।
শাস্তি প্রদানের নামে শিশু নির্যাতনের পক্ষে রায় রয়েছে অনেক অভিভাবকেরও। সোমবারের প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানিয়েছেন, বিশ্বের প্রতি ৪ জন মায়ের একজন বিশ্বাস করেন, শিশুদের যথাযথভাবে শিক্ষিত ও সামাজিকভাবে দক্ষ করে তুলতে তাদেরকে প্রহার বা শারীরিক শাস্তি দেওয়া জরুরি।
তবে তাদের এই ধারণা একদমই সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যদি শিশুরা বাড়িতে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়, কিংবা অভিভাবকদের সামাজিক ও আবেগগত যত্ন থেকে বঞ্চিত হয়— তা হলে তাদের মানসিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়, নিজের মূল্য সম্পর্কেও ভুল ধারণা গড়ে ওঠে।’
‘শিশুদের প্রতি যত্নশীল-স্নেহপূর্ণ অভিভাকত্ব একদিকে যেমন অভিভাবকের সঙ্গে শিশুর বন্ধন দৃঢ় করে তেমনি অন্যদিকে তাদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রেও তা জরুরি। সর্বোপরি অভিভাবকদের মনযোগ এবং স্নেহ শিশুদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরি করে,’ বিবৃতিতে বলেন ক্যাথরিন রাসেল।
সূত্র : এএফপি
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।