সৌদি আরবে হজ চলাকালে তীব্র গরমে অন্তত ১৪ জন জর্ডানি হজ যাত্রী মারা গেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে হিট স্ট্রোকে’ তাদের ১৪ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে আর আরও ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থার বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, হজ চলাকালে ইরানেরও পাঁচজন হজ যাত্রী মারা গেছেন বলে দেশটির রেডক্রিসেন্ট নিশ্চিত করেছে; কিন্তু কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলেনি তারা।
জর্ডানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিখোঁজ হজ যাত্রীদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মৃতদের পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা বা সৌদি আরবে কবর দেওয়ার বিষয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছে তারা।
হজ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ। সৌদি আরবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১৮ লাখেরও বেশি মানুষ হজ পালন করছেন।
হজের সময় বিপর্যয়কর বিভিন্ন ঘটনায় বহু মানুষ মারা যাওয়ার ইতিহাস আছে। এর মধ্যে ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে ও তাঁবুতে আগুন লাগার মতো ঘটনাও আছে। কিন্তু অধিকাংশ সময় তীব্র তাপমাত্রাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। হজের অনেক অনুষ্ঠান বাইরে খোলা জায়গায় ও খালি পায়ে পালন করতে হয়, যা প্রায়ই বয়স্কদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।
সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের প্রধান আয়মান গোলাম গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেছেন, “চলতি বছর হজের সময় মক্কা ও মদীনায় তাপমাত্রা স্বাভাবিক গড়ের চেয়ে ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রি (সেলসিয়াস) বেশি থাকতে পারে।”
মক্কা ও মদীনা শহরকে ঘিরেই পাঁচ দিনের হজ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের হজ শেষ হবে বুধবার।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, আরাফত পর্বতের কাছে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া ২২৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাপ প্রশমণের ব্যবস্থা হিসেবে তারা অনেকগুলো জলবায়ু-নিয়ন্ত্রিত এলাকা স্থাপন করেছেন। তারা পানি বিতরণ করে ও সূর্যের তাপ থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে হজ যাত্রীদের সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হজ যাত্রীদের সব সময় সঙ্গে পানি রাখতে ও সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা জায়গা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
গত বছর হজ চলাকালে অন্তত ২৪০ জন হাজির মৃত্যু হয়েছিল। আর হজের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটিছিল ২০১৫ সালে, ওই বছর ভিড়ের চাপে পিষ্ট ও পদদলিত হয়ে দুই হাজারেরও বেশি হজ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।