গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এরপরই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে দেশটিতে। আগামী ২৮শে জুন অনুষ্ঠিত হবে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন ছয় প্রার্থী।
এই নির্বাচনটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, রাইসি ছিলেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেশ রক্ষণশীল। তাকে কট্টোরপন্থী বলেও অভিযুক্ত করতেন পশ্চিমা নেতারা। ইসরাইলকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলতে ইরানের যে বহুদিনের পরিকল্পনা তা বাস্তবায়নকেই জীবনের একমাত্র ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন রাইসি। এবারের নির্বাচনে তার মতোই কেউ ক্ষমতায় আসবে কিনা সেদিকে তাকিয়ে আছে পশ্চিমারা।
এই নির্বাচন ইরানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চায় যে, একজন প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর মতো বড় ঘটনার পরেও কোনো অস্থিতিশীলতা ছাড়াই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে পারছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের সাথে চরম উত্তেজনার মধ্যেও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পারছে দেশটি। ইরান যে মোটেও কোনো স্বৈরতান্ত্রিক দেশ নয়, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই বার্তাই দিতে চায় দেশটি। ইরানের জনগণের কাছে ভোট উৎসবের মতো। সুষ্ঠু ভোট ও অত্যাধিক ভোটারের উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইরানের আলাদা নাম রয়েছে।
যদিও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের নির্বাচন নিয়ে প্রায়ই নানা অভিযোগ তোলে। ইরানে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে গার্ডিয়ান কাউন্সিল থেকে অনুমতি পেতে হয়। ওই কমিটিতে আছে ১২ বিচারক। এ বছর মোট ৮০ জন নির্বাচনে লড়ার অনুমতি চান, কিন্তু সুযোগ পান মাত্র ছয় জন। পশ্চিমারা এই বিষয়টিকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক বলে আখ্যায়িত করে।
ইরানের এবারের নির্বাচনে যে ছয় জন অনুমোদন পেয়েছেন তাদের মধ্যে পাঁচ জনই রক্ষণশীল। অপরদিকে মাত্র এক জন সংস্কারপন্থী। রক্ষণশীলদের মধ্যে জেনারেল মোহাম্মদ বাকের গালিবাফ বেশ আলোচনায় আছেন। তিনি বর্তমান পার্লামেন্টের স্পিকার। এছাড়া ইরানের রাজধানী তেহরানের প্রাক্তন মেয়র, রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের প্রাক্তন কমান্ডার এবং দুবার ব্যর্থ হওয়া প্রার্থীরা রয়েছেন। আছেন সুপ্রিম লিডার খামেনির একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিও।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।