ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ভূখণ্ডটির নুসেইরাত ও খান ইউনিসে ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নুসেইরাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন।
নিহতদের মধ্যে ৫ জন শিশু। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাতের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি সামরিক হামলার পর পাঁচ শিশুসহ অন্তত ১১ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে আল জাজিরা আরবির সহকর্মীরা জানিয়েছেন।
এর আগে জানানো হয়েছিল, নুসেইরাতের ক্যাম্প ১ এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বোমা হামলা চালানোর পর একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
এদিকে খান ইউনিসের কাছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বোমা হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের পূর্বে আবাসান শহরে একটি বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ৬৬৪ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত ৮৯ হাজার ৯৭ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর করা তিনটি ‘গণহত্যায়’ ৮০ জন নিহত এবং আরও ২১৬ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।