শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে পারলে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস সেনাবাহিনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করবে না এবং সম্প্রতি শেখ হাসিনার পতনের যে আন্দোলন হয়েছে, সেটির সঙ্গে উগ্রবাদী কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতাও নেই।
দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, তিনি খুবই অসুস্থ। হাসপাতালে আছেন। তিনি মাল্টিডিসিপ্লিনারি রোগে ভুগছেন। দেশে তার ভালো চিকিৎসা হচ্ছিল না। আমরা আদালত এবং সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যেন বিদেশে পাঠানো হয়, কিন্তু সেটি হয়নি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখন বিদেশ যাওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা তার নেই। তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তিনি যদি শারীরিককভাবে ঠিক থাকেন, তাহলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবেন।
বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছেন, বিএনপি এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সময় লাগবে। কারণ শেখ হাসিনার সরকারের সময় নির্বাচনী কাঠামো কার্যত ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা দূষিত হয়ে গেছে এবং এখন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের অবস্থানে নেই। এ কারণে তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
তাকে আরো প্রশ্ন করা হয় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। এটির সত্যতা কী? জবাবে ফখরুল বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নিজে বলেছেন তিনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করেছেন। এটি কোনো জবরদস্তি ছিল না, বিপ্লব ছিল। যখন লাখ লাখ মানুষ শেখ হাসিনার বাড়ির দিকে আসছিল, তার নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী বলেছিল, তার (হাসিনা) সামনে দুটি অপশন রয়েছে: এখানে থেকে মানুষের রোষানলে পড়ুন, নাহলে দেশ ছাড়ুন। তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিবেশ অসাধারণ। এসব অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। যখন আমাদের দেশে বা অন্য দেশে পরিবর্তন হয়… বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশে… কিছু মানুষ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে, দুর্ভাগ্যবশত দায়িত্বে থাকা দলের নেতারা ভিকটিমের শিকার হন। তারা মুসলিম হোক আর হিন্দু হোক।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।