ভিডিও

লঙ্কানদের বিরুদ্ধে শেষ হাসি বাংলাদেশের

রিয়াদের লঙ্কা-বধ!

প্রকাশিত: জুন ০৮, ২০২৪, ১০:১৮ দুপুর
আপডেট: জুন ০৮, ২০২৪, ০৩:৩২ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্পোর্টসডেস্ক: লঙ্কানদের দেয়া ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ উইকেটে বড় জুটি গড়ে শঙ্কার মেঘ কাটিয়ে দেন তাওহীদ হৃদয় এবং লিটন দাস। দ্রুত সময়ে এই দুই ব্যাটার আউট হলে আবারও চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে সেই চাপ কাটিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে শনিবার (৮ জুন) শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার দেয়া ১২৫ রান তাড়া করতে নেমে ১ ওভার হাতে রেখে জিতেছে টাইগাররা। বল হাতে তাসকিন, রিশাদ, মুস্তাফিজদের বল ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন হৃদয়-লিটনরা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০তম পরাজয়ের স্বাদ পেল শ্রীলঙ্কা। 
এই জয়ে 'ডি' গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলে তিনে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের সমান একটি করে জয় নিয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যথাক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নেদারল্যান্ডস। ১ ম্যাচ হেরে চারে নেপাল। দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরে তলানিতে শ্রীলঙ্কা। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে লেগ সাইডে শট খেলতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে নুয়ান থুসারা বোল্ড করেন তানজিম তামিমকে।    

৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দেখেশুনে খেলতে শুরু করেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত এবং লিটন দাস। দুজনে মিলে ২২ রানের জুটিও গড়েন। তবে ষষ্ঠ ওভারে থুসারার বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। ১৩ বলে ৭ রান করে ফেরেন অধিনায়ক।দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর লিটন এবং হৃদয়ের ব্যাটে চাপ সামলে ওঠে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন লিটন এবং হৃদয়। বাংলাদেশ ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পরপর ৩ বলে ৩ ছক্কা মেরে পরের বলে আউট হন হৃদয়। ৪ ছক্কা ও ১ চারে ২০ বলে ৪০ রান করেছেন হৃদয়।

তখন বাংলাদেশের বোর্ডে ৯১ রান। শেষদিকে ১৯ রান নিতে আরও ৪ উইকেট হারিয়ে হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ৯৯ রানে এলবিডব্লিউ হন লিটন। ১০৯ রানের মাথায় মাথিশা পাথিরানার বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে থিকসানার হাতে ধরা পড়েন সাকিব আল হাসান (১৪ বলে ৮)।

এরপর ১১৩ রানে থাকতেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নুয়ান থুসারাকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন রিশাদ হোসেন (৩ বলে ১)। পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বুটে বল লাগলে থুসারার জোরালো আবেদনে আঙুল তোলেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ পক্ষে যায় লঙ্কানদের।শেষে ১২ বলে ১১ রান দরকার বাংলাদেশের। দাসুন শানাকাকে ওভারের প্রথম বলেই দারুণ এক ছক্কা হাঁকান মাহমুদউল্লাহ। এতে ম্যাচ চলে আসে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। ওই ওভারে এক ওয়াইড আর শেষ বলে দৌড়ে ২ রান নিয়ে পুরো ১১ রান করে তুলে নেয় টাইগাররা। এতে উচ্ছ্বাসে ভাসেন বাংলাদেশ।

ডালাসে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা শুরুটা পায় ভালো। তানজিম হাসান সাকিবকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে খোলা হয় রানের খাতা। সেই তানজিমের ভুল থ্রোতে অতিরিক্ত চার রান পেয়ে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর হয়ে ওঠে লঙ্কানরা।তবে তৃতীয় ওভারে তাসকিন বল হাতে নিয়ে এনে দেন উইকেট। যদিও শ্রীলঙ্কা ক্রমাগত চার হাঁকাতে থাকে তাসকিনকে। অনেকটা একই অভিজ্ঞতা হয় সাকিবেরও। তবে মুস্তাফিজের হাত ধরে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়েই কাটার মাস্টার শিকার করেন উইকেট। কাটারের পাওয়ার দেখিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও তিনিই এনে দেন।

দলীয় ৭০ রানে ফিজের ভেলকিতে বোকা বনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ তুলে দেন ২৮ বলে ৪৭ রান করা ভয়ংকর পাথুম নিসাঙ্কা। আর তাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে বাংলাদেশের হাতে। তাসকিন করেন দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, যোগ দেন রিশাদও।বাংলাদেশের বোলারদের তৈরি করা প্রবল চাপের মুখে একপর্যায়ে খেই হারিয়ে ফেলে লঙ্কানরা। মিলিয়ে যেতে থাকে পাওয়ারপ্লের দাপট। মুস্তাফিজদের দেখেশুনে খেলতে গিয়ে ঘাম ঝরে যায় ধনঞ্জয়া ডি সিলভাদের। সুবিধা করতে পারেননি চারিথ আসালঙ্কাও। স্ট্রাইক রেট একশরও নিচে রেখে ১৫তম ওভারে রিশাদ হোসেনের শিকারে পরিণত হন তিনি। পরের বলে গোল্ডেন ডাকের শিকার হন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

এর পরের অংশে শুধুই বাংলাদেশের জয়জয়কার। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৪ রান। বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন তিনটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া তাসকিন আহমেদ দুটি ও তানজিম হাসান সাকিব পান একটি উইকেট। ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব আল হাসান।জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই হারিয়ে ফেলে সৌম্য সরকারকে। ১৩টি ডাক নিয়ে শূন্য রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েন এই বাঁহাতি ওপেনার, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ডাক এর রেকর্ড। থিতু হতে পারেননি তানজিদ হাসান তামিম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। তবে হিরো হওয়ার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে যান লিটন দাস।

দারুণ ছন্দে থাকা হৃদয়কে নিয়ে দেখেশুনে এগোতে থাকেন লিটন। একটি চার ও চারটি ছক্কায় ২০ বলে ৪০ রানের ক্যামিও খেলে হৃদয় যখন বিদায় নেন, দল তখন পাচ্ছে জয়ের সুবাস। অন্য প্রান্তে লিটনও চালিয়ে যান প্রচেষ্টা। তবে বেশি সাবধানী ব্যাটিং চাপে ফেলে দলকে, বিশেষ করে ৩৮ বলে ৩৬ রান করে আউট হলে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি, ৯৯ রানে দল হারায় ৫ম উইকেট।বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও এদিন সুবিধা করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ১৪ বলে ৮ রান করে আত্মঘাতী শটে বিদায় নেন ঠিক জয়ের আগমুহূর্তে। জয় থেকে দল যখন মাত্র ১২ রান দূরে, তখন ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন রিশাদ হোসেন। পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন তাসকিন। তবে প্রবল চাপের মুখে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ঠাণ্ডা মাথায় পালন করেন ফিনিশিংয়ের দায়িত্ব। শেষপর্যন্ত ১ ওভার ও ২ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS