টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। আগামী শনিবার (২৯ জুন) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে তারা। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিনের প্রথম সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত ম্যাচে আগে ব্যাটিং করতে নেমে রোহিত শর্মার ৩৯ বলে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৫৭ রান ও সূর্যকুমার যাদবের ৪৭ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ইংল্যান্ড ২০ বল বাকি থাকতে ১০৩ রান করে অলআউট হয়। ফলে ভারত ৬৮ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। বাদ পড়ার শঙ্কায় ছিল গ্রুপ পর্বেই। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে এসেছে ইংলিশরা। কিন্তু টানা দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে পারলো না জস বাটলারের দল। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের রীতিমত গুঁড়িয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে ভারত।
১৭২ রান তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিলেন জস বাটলার। কিন্তু ১৫ বলে ২৩ করে অক্ষর প্যাটেলের বলে রিভার্স সুইপ করে উইকেট বিলিয়ে দেন ইংলিশ অধিনায়ক। তিনি ফিরতেই ৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড।
ফিল সল্টকে (৫) বোল্ড করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। জনি বেয়ারস্টো শূন্য রানেই স্টাম্প হারান অক্ষরের ঘূর্ণিতে। বাঁহাতি এই স্পিনারের তৃতীয় শিকার মঈন আলি (১০ বলে ৮)। আউটটি ছিল বেশ অদ্ভুত। বল প্যাডে লেগে উইকেটরক্ষক পান্তের হাতে চলে গেলে খেয়াল করেননি মঈন, কিছুটা সামনে চলে আসেন। বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন পান্ত।
স্যাম কারান প্রমোশন পেয়ে ওপরে নেমেও দলের কাজে লাগেননি। ৪ বলে ২ করে কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন তিনি। হ্যারি ব্রুক ভালো খেলছিলেন। কুলদীপকে রিভার্স সুইপে দারুণ এক বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ওভারেই আরেকবার একই শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ১৯ বলে ২৫ করা এই ব্যাটার। ইংল্যান্ডের আশা আসলে শেষ তখনই।
স্বীকৃত ব্যাটারের মধ্যে ছিলেন কেবল লিয়াম লিভিংস্টোন। তিনিও পড়েন রানআউটের ফাঁদে (১৬ বলে ১১)। ৮৮ রানে ৯ উইকেট হারানো ইংলিশরা কোনোমতে একশ পেরিয়েছে জোফরা আর্চারের ব্যাটে। ১৫ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২১ করেন তিনি। ১৬.৪ ওভারে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ১০৩ রানে।
ভারতের দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব আর অক্ষর প্যাটেল নেন ৩টি করে উইকেট। দুটি উইকেট বুমরাহর।
এর আগে রোহিত শর্মা আর সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটে চড়ে ৭ উইকেটে ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল ভারত।
মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টসভাগ্য ছিল ইংল্যান্ডের পক্ষে। টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে ভারত। ৯ বলে ৯ রান করে বিরাট কোহলি বোল্ড হয়ে যান পেসার রিস টপলের দারুণ এক ডেলিভারিতে।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে রিশাভ পান্তকেও হারিয়ে বসে ভারত। ৬ বলে ৪ রানে থাকার সময় স্যাম কারানকে ফ্লিক করতে গিয়ে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার।
এরপর রোহিত-সূর্যকুমার চালিয়ে খেলা শুরু করেন। এর মধ্যে ৮ ওভার শেষ হতেই ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। ভারতের রান তখন ২ উইকেটে ৬৫।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ৩৬ বলে ফিফটি তুলে নেন রোহিত। হাফসেঞ্চুরি করার পরের ওভারেই অবশ্য আউট হয়ে যান ভারতীয় অধিনায়ক। ৩৯ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ৫৭ করে আদিল রশিদের গুগলিতে বোল্ড হন তিনি। ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি ভাঙে তাতে।
সূর্যরও সুযোগ ছিল হাফসেঞ্চুরি হাঁকানোর। কিন্তু ৩৬ বলে ৪৭ রানে থামতে হয় তাকে। জোফরা আর্চারকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন হার্ডহিটিং এই ব্যাটার।
১৩ বলে ১ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। তাকে তুলে নেন ক্রিস জর্ডান। ওই ওভারেই শূন্য করে ফেরেন শিভাম দুবে। শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ৬ বলে ১০ আর রবীন্দ্র জাদেজা ৯ বলে অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে। ইংল্যান্ডের জর্ডান ৩৭ রান খরচ করলেও তুলে নেন ৩টি উইকেট।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।