স্পোর্টস ডেস্ক : লাতিন আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া। নিজেদের রেকর্ড ও টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১৬তম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে এদিন মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। একইসঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো স্বপ্নের ফাইনাল জয়ের লক্ষ্য কলম্বিয়ার। সোমবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কোপার ফাইনালে মুখোমুখি হবে তারা।
লিওনেল মেসির শেষটা কি দেখছি আমরা এবারের কোপা আমেরিকায়? আক্রমণের পুরো দায়িত্ব আর নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছেন না, বরং শান্তভাবে অপেক্ষা করছেন তাঁর মুহূর্তের জন্য। তাতেও যে গুটিকয় ঝলক দেখিয়েছেন এবারের আসরে, সেগুলোও পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো। এক ম্যাচ বিশ্রামে ছিলেন, সতীর্থরা অনায়াসে তা পার করে দিয়েছেন। বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পরা এই দলের ওপর খুদে জাদুকরের এখন অগাধ আস্থা। ফাইনালের আগে সেই মনোভাবের কথা খোলাখুলি জানিয়েছেনও আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। বলেছেন তার শান্ত থাকার কথা, প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগের তৃষ্ণার কথা। সন্দেহ নেই, আর্জেন্টিনা বাদে লাতিন আমেরিকার যে দলটি এই মুহূর্তে ফুটবলের রং ছড়াচ্ছে, সেই কলম্বিয়ার বিপক্ষে আগামীকাল ভোরে মায়ামিতে শিরোপার লড়াইয়ে নামছে মেসি অ্যান্ড কোং। মেসির খেলায় বিদায়ের রাগিণী, আনহেল দি মারিয়া তো সজল চোখে সেই ক্ষণ বেছেই নিয়েছেন এর মধ্যে, পোড় খাওয়া নিকোলাস ওতামেন্দির চেহারায়ও বিষাদ।
২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০১৫ কোপা আমেরিকা, ২০১৬ কোপা সেন্টেনারিওর ফাইনাল এই খেলোয়াড়দের খালি হাতে ফিরিয়েছে। লিওনেল স্কালোনির অর্কেস্ট্রায় সেই তাঁরাই ভেঙেছেন ব্যর্থতার বৃত্ত; রদ্রিগো দ্য পল, এনসো ফার্নান্দেস, হুলিয়ান আলভারেস, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোদের সঙ্গে নিয়ে। এই দল ছন্দে থাকা কলম্বিয়াকেও পেরিয়ে যাবে এমনটাই তো হওয়ার কথা। যদিও অন্য রকম ভাবার লোকও এখন কম নয়।
১৯৯৪ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনাকে ৫-০ ব্যবধানে হারানো ম্যাচে গোল করা আদলফো ভ্যালেন্সিয়া যেমন বলেছেন, ‘মেসিকে এখন যে কেউই মার্ক করতে পারে।’ কলম্বিয়ার কিংবদন্তি কার্লোস ভালদেরামাও বলেছেন, ‘কলম্বিয়াই জিতবে। এই মুহূর্তে ওরা যেমন খেলছে, তাতে অসাধারণ একটি দলই মনে হচ্ছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখাই যায়।’ চিলিয়ান সাবেক তারকা ইভান জামোরানোর বাজি আবার আর্জেন্টিনাই, ‘স্কালোনির এই দলের কোনো ঘাটতি নেই, বাড়তি পাওয়া বরং বিশ্বসেরা খেলোয়াড়টিও তাদের।’ কোপা, বিশ্বকাপ, কোপা—সাফল্যের এই চক্রপূরণ ইউরোপে এর আগে করে দেখিয়েছে স্পেন। লাতিন প্রথম দল হিসেবে আর্জেন্টিনার সামনে এবার সেই সুযোগ। এটা ঠিক যে কলম্বিয়া ২৮ ম্যাচ অপরাজিত। আর্জেন্টিনা গত পাঁচ বছরে ৬১ ম্যাচে হেরেছে মাত্র দুইবার। আর শেষ বেলায় হলেও এখনো মাঠে আছেন মেসি, দি মারিয়া। আর্জেন্টিনার পক্ষেই তাই সমীকরণ। কলম্বিয়ার মধ্যমাঠে হামেস রোদ্রিগেসের ‘পুনর্জন্ম’ নতুন অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে কি না, সেটাই দেখার। তাদেরও ডাগআউটে আরেক আর্জেন্টাইন নেস্তর লরেন্সো। হোসে প্যাকারম্যানের সহকারী থেকে যিনি এই কলম্বিয়াকে দিয়েই নিজেকে চিনিয়েছেন নতুন করে। ম্যাচ শুরুর আগেই তাই মিলছে রোমাঞ্চের আগাম উপলক্ষ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।