ভিডিও

ঠাকুরগাঁওয়ে শরীরে গুলি নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে লিটন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৬:৪৬ বিকাল
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৬:৪৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে বাবা-মায়ের শেষ ভরসা হবেন মো. লিটন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে লিটন হয়ে গেছেন এখন পরিবারের বোঝা। গত ৪ আগস্ট ঠাকুরগাঁও শহরের কোর্ট চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন।

সেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়েছিল লিটনের পুরো শরীর। চিকিৎসকরা বলছেন, লিটনের শরীরে এখনও প্রায় ৫শ’ গুলি রয়ে গেছে। সেই গুলি বের করা সম্ভব না হওয়ায় এখনও হাঁটতে পারছেন না তিনি।

লিটনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের দক্ষিণ সালান্দর পাড়ার মিলন নগর মহল্লায়। বাবার নাম ইয়াকুব আলী। তিন ভাইয়ের মধ্যে লিটন সবার ছোট। তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বাবা ইয়াকুব আলী স্যানিটারি স্লাব বিক্রি করে সংসার চালান।

বর্তমানে লিটনের চিকিৎসা, সুস্থ হওয়া ও তার কাজে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার পরিবারে। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়িতে যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন লিটন। অভাবের সংসারে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে খন্ডকালীন চাকরি করতেন একটি ওষুধ ফার্মেসিতে। সে চাকরিও এখন হারিয়েছেন।

আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) লিটনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছনায় কাতরাচ্ছিলেন লিটন। তার পাশে হতাশা আর উদ্বিগ্ন হয়ে বসে আছেন তার মা-বাবা। সন্তান সুস্থ হতে পারবে কি না, এ নিয়ে চিন্তিত তারা। লিটনের বাবা  ইয়াকুব আলী বলেন, টানাটানির সংসারে ধারদেনা করে ছেলের জন্য ওষুধ কিনতে হচ্ছে। বড় স্বপ্ন ছিল ছেলেটা পড়ালেখা শেষ করে একদিন সংসারের হাল ধরবে। পরিবারের অভাব দূর হবে।

কিন্তু আমাদের সাজানো স্বপ্ন এখন শেষ হয়ে গেল। সরকারিভাবে এখনও কোন সহযোগিতা পাইনি। লিটনের বর্তমান চিকিৎসক ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. কারণ মাথায় যে ১৫টি গুলি আছে, এর জন্য ১৫বার তার অস্ত্রপচার করতে হবে। এতে রোগীর আরও জটিল অবস্থা তৈরি হবে। এছাড়াও গুলিগুলো খুবই ছোট, কেটে সাথে সাথে বের করা যাবে এমনটিও না।

ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল উইংয়ের দায়িত্বরত সদস্য রাকিব ইসলাম বলেন, উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে লিটনের শরীরের গুলিগুলো যদি বের করা যায় তাহলে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে সে। তবে এই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ যা জোগাড় করা সম্ভব নয় তার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে।

এজন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের কাছে তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান এ সমন্বয়ক।
আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) লিটন ও তার পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাত করেন। এসময় জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং তার চিকিৎসা ও সংসারের ব্যয়ভার বহন করার জন্য আর্থিক সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS