মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দায় আমানতের টাকা ফেরত নেওয়ার চাপে সিরাজুল ইসলাম বকুল (৪৫) নামের এক এনজিও কর্মকর্তা আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর তিনি মারা যান।

নিহত সিরাজুল ইসলাম বকুল উপজেলার কশব গ্রামের ইয়াদ আলী সরদারের ছেলে। তিনি সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে বেসরকারি একটি সংস্থার পলাশবাড়ি শাখায় ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন।

জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে কার্যালয় তালাবদ্ধ করে আমানতকারীদের জমা করা অন্তত ৬ কোটি টাকা নিয়ে রাতারাতি উধাও হন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আমানতকারীদের চাপের মুখে গতকাল শুক্রবার বিকেলে টাকা ফেরত দেওয়ার দিন ধার্য ছিল।

এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে গ্যাসবড়ি (ইঁদুর মারা বিষের ট্যাবলেট) সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম বকুল। তাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তর করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর মারা যান সিরাজুল ইসলাম বকুল। এতে দিশোহারা হয়ে পড়েছেন ৮৮ থেকে ৯০ জন আমানতকারী। সংস্থায় জমা করা অন্তত ৬ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় পড়েছেন তারা।

এলাকাবাসী জানান, প্রায় দুই বছর আগে কশব ইউনিয়নের পলাশবাড়ি বাজারে সুরমা মাল্টিপারপাসের একটি শাখা খোলা হয়। এরপর দৈনিক কিস্তিতে এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি। অল্প দিনেই এরা ব্যবসায়ীসহ এলাকার লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন সংস্থার ব্যবস্থাপক ও মাঠকর্মীরা।

ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ম্যানেজার বকুলের প্রলোভনে পা দিয়ে ওই সংস্থায় আমি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করি। চুক্তি অনুযায়ী কয়েক মাস ঠিকভাবে মুনাফার টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে টালবাহানা শুরু করে। দুই সপ্তাহ আগে কার্যালয় তালাবদ্ধ করে তারা পালিয়ে যান।

এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, বিষয়টি জেনেছি। রাজশাহী হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনায় মান্দা থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।