ভিডিও

অনলাইন জুয়ার ফাঁদ

ধুনটে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ বাড়ছে দাম্পত্য কলহ

প্রকাশিত: এপ্রিল ০২, ২০২৪, ১০:০২ রাত
আপডেট: এপ্রিল ০২, ২০২৪, ১০:০২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মুঠোফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ এই জুয়ায় আসক্ত হচ্ছেন। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেকে। এ কারণে বাড়ছে দাম্পত্য কলহ ও পারিবারিক অশান্তি। আর জুয়ার টাকা যোগাতে ঘটছে চুরির ঘটনাও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার সর্বত্র এই জুয়া বিস্তার লাভ করছে। সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময় খোয়াচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না।

জুয়ায় জড়িত ব্যক্তিরা জানান, স্মার্টফোনে নির্ধারিত কয়েকটি অ্যাপস ডাউনলোড করে সেখানে জুয়া খেলা চলে। এসব অ্যাপসের বেশির ভাগই পরিচালনা করা হচ্ছে বিদেশ থেকে। এদেশে এগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধি (এজেন্ট) রয়েছে। এ উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারেই রয়েছে এই ধরণের এজেন্ট। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ বা প্রদান করে থাকেন।

এজেন্টরা বিদেশি অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৪০ টাকা কমিশন পায়। অনলাইন এই জুয়ার কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি। ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের এক নারী বলেন, তার স্বামী অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হতো।

কলহ দেখা দেওয়ার একপর্যায়ে পারিবারিকভাবে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালেরপাড়া গ্রামের এক খামারি জানান, প্রথমে ৩৬ টাকা বিনিয়োগ করে ১৬ হাজার টাকা পান তিনি। এতে লোভে পড়ে এই খেলায় মারাত্মক আসক্তি চলে আসে তার।

এই জুয়ার নেশায় পড়ে ছয় মাসের মধ্যে বাড়ির মাত্র ৪ শতক জায়গা রেখে সবটুকু আবাদি জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। অভাবে পড়ায় স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে খামারটিও বন্ধ করে দিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।

এক শিক্ষার্থী জানায়, বন্ধুদের জুয়া খেলতে দেখে প্রাইভেট পড়ার টাকা শিক্ষককে না দিয়ে তা দিয়ে খেলা শুরু করেছিল । শুরুর দিকে ভালো লাভ হতে থাকে। কিন্তু তার পরেই লোকসানের পাল্লাটা বাড়তে থাকে। এটি নেশার মতো। খেলা শুরু করলে যতক্ষণ টাকা থাকে, ততক্ষণ খেলতে ইচ্ছা করে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, অনলাইনে জুয়া খেলার বিষয়টি অবগত আছি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS