রংপুর প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দীর্ঘ খরার ঝুঁকিতে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলা। ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এখানকার কৃষি অর্থনীতিতে। অনাবৃষ্টি, তীব্র দাবদাহ, খরা আর শীতকালে ঘন কুয়াশায় ফসলের রোগবালাই ছড়িয়ে পড়া ছাড়াও সেচের পানির সঠিক ব্যবহার না করায় উৎপাদন খরচ দিন দিন বেড়ে চলছে।
বিশেষ করে বোরো মৌসুমে পানি নির্ভর এই ধান উৎপাদনে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। কৃষি বিশেজ্ঞরা বলেছেন, খরা ও বন্যা মোকাবেলায় ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ২০দিন ধরে রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠানামা করছে।
হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং অনাবৃষ্টির কারণে খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। বৃষ্টি কমায় ফসলে রোগবালাইয়ের প্রকোপ যেমন বেড়েছে, একই সাথে প্রয়োজন হচ্ছে অতিরিক্ত সেচের। ফলে উৎপাদন ব্যয় সামাল দিতে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের।
রংপুর বিএডিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সেচ) এসএম শহীদুল আলম জানান, আমাদের দেশের কৃষকেরা বোরো ও আমন ধান চাষ করার সময় জমি তৈরি থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত এক কেজি ধানের জন্য খরচ করেন ৩ হাজার লিটার পানি। এতে করে সেচ দিতে তাদের বাড়তি খরচ করতে হয়।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, রংপুর বিভাগে পরিমাণ মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে খরার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে ক্ষুদ্র চাষিদের ফসল উৎপাদনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি গবেষক ফরিদ হোসেন জানান, সাধারণ খরায় ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ, মাঝারি খরায় ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ আর তীব্র খরায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন জাত উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিতে হবে। খরা এবং বন্যার জন্য আলাদা আলাদা জাত উদ্ভাবন করতে হবে। তা না হলে হুমকিতে পড়বে খাদ্য নিরাপত্তা।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ হাসান জানান, শুধু খরাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির মতো দুর্যোগও মোকাবিলা করতে হচ্ছে রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে চরম হুমকিতে পড়ছে এখানকার কৃষি অর্থনীতি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।