ভিডিও

৪৬৮ বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে শেরপুরে ‘জামাইবরণ’ কেল্লাপোশী মেলা কাল শুরু

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৪, ০৭:৪৩ বিকাল
আপডেট: মে ২৬, ২০২৪, ০১:৫৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কেল্লাপোশী মেলা আগামীকাল রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে। তিথি অনুযায়ি প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় আগামীকাল রবিবার থেকে উপজেলা সদরের অদূরে কেল্লাপোষী নামকস্থানে ৪৬৮ বছরের প্রাচীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই মেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা এই মেলাকে ‘জামাইবরণ’ মেলাও বলে থাকে।

মেলা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। আনন্দ উল্লাস আর উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় লাখো মানুষ। মেলা উপলক্ষ্যে এরইমধ্যে আত্মীয়স্বজনরা চলে এসেছেন। দাওয়াতি অতিথিদের মধ্যে নতুন-পুরনো জামাই-বউ রয়েছেন তালিকার শীর্ষে। শ্বশুরালয়ে আসা জামাইরা থাকেন ভিন্ন আমেজে। কারণ মেলা করতে তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় মোটা অঙ্কের সেলামী।

সেই সেলামী আর নিজের গচ্ছিত টাকা দিয়ে জামাইরা মেলা থেকে খাসি কিনে শ্বশুর বাড়িতে আনেন। এমনকি বড় বড় মাটির পাতিল ভর্তি করে মিষ্টান্ন সামগ্রী, সবচেয়ে বড় মাছ, মহিষের মাংস, রকমারি খেলনা কেনেন। এছাড়া শ্যালক-শ্যালিকাদের নিয়ে মেলা ঘুরে ঘুরে সার্কাস, নাগোরদেলা, হুন্ডা খেলা, যাদু খেলা, পতুল নাচ দেখিয়ে দিনব্যাপি আনন্দ শেষে ছাতা, কাঠের ও ঝিনুকের তৈরি খেলনা সামগ্রী নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরেন। অন্যদিকে মেলা থেকে সারা বছরের জন্য রকমারি মসলা, তুলা, কাঠের সামগ্রী, বড় বড় ঝুড়ি, চুন কিনে রাখেন গ্রামের সাধারণ মানুষ।

এদিকে মেলা শুরুর প্রায় সপ্তাহখানেক আগ থেকে গ্রামে গ্রামে চলে মাদার খেলা (লাঠি খেলা)। একটি বড় বাঁশকে লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ও নানা রঙে সাজিয়ে এবং সেটির বিভিন্ন স্থানে চুল লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল বেরিয়ে পড়ে।

ঢাক-ঢোল, গান-বাজনার নানান সরঞ্জামাদি আর লাঠি নিয়ে তারা গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে শহরে খেলা দেখায়। মেলা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত চলে ওই মাদার খেলা। জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় রোববার দলটি মেলা এলাকায় অবস্থিত মাজার প্রাঙ্গনে গিয়ে তা শেষ করে। এবছরও মেলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নস্থানে মাদার খেলা চলছে।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত কেল্লাপোষী নামক স্থানে ৩দিনব্যাপি ওই মেলায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে কেনা কাটার ধুম। দূর-দূরান্ত থেকে আগত বিক্রেতারা এখানে দোকান সাজিয়ে বসেন।  মেলার প্রধান আকর্ষণ হলো বিভিন্ন ধরণের কাঠের আসবাবপত্র, মিষ্টি-ফলমূল, নানা জাতের বড় বড় মাছ, কুঠির শিল্প সামগ্রী, মহিষ ও খাসির মাংস, রকমারি মসলা। তিনদিন মেলা চলার নিয়ম থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা ছয়-সাত দিনে গড়ায়। এই মেলায় কোটি টাকার দ্রব্যাদি কেনাবেচা হয়।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মেলা করতে কমিটির পক্ষ থেকে ৩দিনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যেই তারা কাজ শুরু করেছেন। তবে মেলায় কোনো ধরনের অশ্লীল নাচ-গান ও জুয়া খেলতে দেওয়া হবে না বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা ।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS