দিনাজপুর প্রতিনিধি : ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশে আষাঢ় ও শ্রাবণ বর্ষাকাল। বাংলা দিনপঞ্জির হিসেবে আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণের অর্ধেক মাস গড়ালেও ভরা বর্ষাকালে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা নেই ‘ধানের জেলা’ হিসেবে খ্যাত দিনাজপুরে। এতে আমন ধান আবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে পানির অভাবে অনেক কৃষক এখন সেচ দিয়ে রোপণ করছেন আমন চারা। পাশাপাশি জমির রোপণকৃত চারা রক্ষায় প্রায় প্রতিদিনই সেচ দিতে হচ্ছে সেচযন্ত্র দিয়ে।
এতে বৃষ্টি নির্ভর এই আমন আবাদ করতে বিঘাপ্রতি বাড়তি খরচে হিমসিম খাচ্ছেন কৃষকরা। বর্ষা মৌসুমেও স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষি বিভাগ এই পরিস্থিতিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করে কৃষকদের সম্পুরক সেচ ব্যবস্থায় আমন চারা রোপণের পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, দিনাজপুর জেলায় ভরা বর্ষাকালেও বর্তমানে ১৭ হাজার ৩০১টি সেচযন্ত্র চালু করে আমন আবাদ করছেন কৃষকরা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, দিনাজপুর জেলায় মোট ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১ লাখ ২৪ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৮ শতাংশ। ভরা বর্ষা মৌসুমেও কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়াকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে আবাদ তো করতে হবে। তাই কৃষকদের সম্পুরক সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে আমন রোপণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে। এতে বাড়তি খরচ হলেও কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, জমিতে সেচ দেয়ার জন্য দিনাজপুর জেলায় গভীর ও অগভীর মোট ৭৬ হাজার ৬৪২টি সেচযন্ত্র। যা সাধারণত বোরো মৌসুমে ব্যবহৃত হয়। বর্ষা মৌসুমেও কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় ইতোমধ্যেই দিনাজপুর জেলায় ১৭ হাজার ৩০১টি সেচযন্ত্র চালু করে আমন আবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়ায় পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, দিনাজপুরে সবশেষ মাত্র ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২২ জুলাই। তার আগে ২০ জুলাই বৃষ্টিপাত হয় মাত্র ১ মিলিমিটার। বর্ষাকাল হিসেবে যা সামান্যই বলা যায়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী তিনি আশাপ্রকাশ করেন দু-একদিনের মধ্যেই সামান্য বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর আগামী ৬ আগস্ট থেকে এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।