জয়পুরহাট কোর্ট রিপোর্টার : জয়পুরহাটে শিশু সন্তানকে হত্যার দায়ে মা রেশমা খাতুন ওরফে বুলি বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। অর্থদন্ডের টাকা অনাদায়ে তাকে আরও দুই বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলো, জয়পুরহাট সদর উপজেলার সগুনা গোপীনাথপুর গ্রামের আসাদুজ্জানের স্ত্রী রেশমা খাতুন ওরফে বুলি বেগম। বুলি বেগম জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। আসামি বুলি বেগম আদালতে হাজির না থাকায় বিচারক তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।
আজ বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ নুরুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বুলি বেগম তার স্বামী আসাদুজ্জামানের ভাই ভাবীদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ করতো।
তার ভাই ভাবীর সঙ্গে প্রতিবেশী মানিকের সুসস্পর্ক থাকায় তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন মানিক। এ নিয়েও ঝগড়া হতো। গত ২০০৭ সালের ১ মে মানিক সকালে তাদের বাড়িতে এলে মানিকের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে বুলি বেগম লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মানিকের মাথায় আঘাত করে।
লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় মানিককে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মানিকের স্ত্রী সদর থানায় বুলি বেগম এবং তার স্বামী আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় তারা গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কয়েক দিন জেল হাজতে ছিল। কিছুদিন পর তারা আদালত থেকে জামিন পান।
এ ঘটনার পর বুলি বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে ২০০৭ সালের ১৩ জুলাই সকাল ৮ টার দিকে তার শিশুপুত্র রিয়াদকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রতিবেশী মানিক ও আসাদুজ্জানের ভাই ভাবীর উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বুলি বেগমের আর এক শিশু সন্তান তা দেখে ফেললে বিষয়টি তাৎক্ষনিক জানাজানি হয়।
এ ঘটনায় আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে তার শিশু সন্তান রিয়াদকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী বুলি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করে। তদন্তে শেষে পুলিশ বুলি বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এ মামলায় স্বাক্ষ্য প্রমান শেষে বিচারক এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি এবং আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আলহাজ্ব এড. তৈয়ব আলী মন্ডল।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।