ভিডিও

পাবনার ফরিদপুরে বাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে চায়না জাল তৈরির কারখানা

প্রকাশিত: আগস্ট ০৬, ২০২৪, ০৫:১৬ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ০৬, ২০২৪, ০৫:১৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

ফরিদপুর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় চায়না দুই-দুয়ারি জাল তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ায় উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে এই জাল তৈরির কারখানা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ২৫০টি বড় আকৃতির জাল তৈরির কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার জাল তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ডেমড়া গ্রামে আব্দুল খালেক, আব্দুল জব্বার, আলাউদ্দিন, বিদ্যুৎ হলদার, পরিতোষ হলদার, নিত্য হলদার, পরি হলদার, দীপ্ত হলদার, দিলীপ হলদার, তালক হলদার, আলীম, রজব আলী, মিলন, রফিক, মোয়াজ্জেম, সামাদসহ প্রায় ১৫০টি, রতনপুরে শাহীন, মানিক, সমেশ, আলীম, পলাশ, আমিন, লতা খাতুন, মিজানুরসহ ৫০টি, আগপুঙ্গলী গ্রামের কালাম, মুন্না, নিমরুল, শিবু, রমজান হোসেন, নুরুল প্রামাণিক, পতিত হলদার, ঈশ^র হলদার, শিপন ও সুজনসহ ৩০টি, গোপালনগর গ্রামের প্রসেনজিত হলদার, লক্ষণ হলদার, সন্তোষ হলদার, ময়েন, সালাম, রিপন ও আলামিনসহ ২০টি বড় কারখানা রয়েছে। এছাড়া এসব এলাকার সহস্রাধিক বাড়িতেও জাল তৈরি করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের আব্দুল জব্বার ডেমড়ায় বিশাল কারখানা করে এই জাল তৈরি করছেন। বেড়া উপজেলার সোনাতলা থেকে আগত রিপন হলদার, ঈশ্বর হলদার ও অভি হলদার এবং ভাঙ্গুড়ার থেকে আগত হরি হলদার এসে ডেমড়া ও গোপালনগরে বাসা ভাড়া করে এ জাল তৈরি করছেন। তারা প্রায় ছড় বছর ধরে কোটি কোটি টাকার জাল তৈরি করে তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন। মহিলা, হাইস্কুলসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ জাল তৈরির সাথে জড়িত।

গত ৮ মার্চ ও ৪ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুর্শিদা খাতুন ডেমড়ায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কারখানা থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার চায়না জাল পুড়িয়ে দেন। গত ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই এবং ১ আগস্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল মোর্শেদ মৃধাপাড়া ও ডেমড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০টি কারখানা থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের জাল আটক করে পুড়িয়ে দেন। এছাড়া আগপুঙ্গলী ও গোপালনগরের আরও কয়েকটি কারখানা থেকে জাল আটক করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

গত ৩০ জুলাই উপজেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মৎস্য অফিসারসহ বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উপজেলার অন্তত ২০ জন মৎস্যচাষি ও মৎস্য শিকারী এবং সাংবাদিকগণ বলেন, চায়না জাল তৈরি ও বিপণন বন্ধ করতে প্রশাসনের জোড়ালো ও কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে পাবনার সাথে দেশের অন্যান্য জেলাও চায়না জালে সয়লাব হয়ে যাবে।

উপজেলার মাছ শিকারীরা এ জাল দিয়ে বড়বিলা, ধলাইপাথার, পিপুলশিলা, রউলবিল, পাধুয়ার বিল, পারফরিদপুর বিল এবং বড়াল, চিকনাই, রুকনাই, ইছামতি, গোয়ালা প্রভৃতি নদীতে মাছ শিকার করছেন। খাল বা ডোবায়ও এ জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া রতনপুর, দিঘুলিয়া, বিলচান্দক, ধলাইপাথার, বড়বিল,বড়াল, গুমানী নদীসহ বিভিন্ন খাল-বিলে বর্ষার পানি ঢুকেছে।

বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের পোণাও এসব জলাশয়ে ঢুকছে। প্রবেশদ্বারগুলোতে চায়না জাল, খড়াজাল, কারেন্ট জাল, বাদাইসহ নানা প্রকার জাল ব্যবহার করে অবাধে মাছ শিকার করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন সুলতানা ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজিত কুমার মুন্সি বলেন, এখন থেকে নিয়মিতভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জাল তৈরি বন্ধ করা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS