ভিডিও

ফেসবুকে উত্তরাঞ্চলের বন্যা নিয়ে গুজব যা বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আবহাওয়াবিদ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৩:৩৩ দুপুর
আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০১:৩৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: সিকিমে পাহাড় ধসে ভেঙে গেছে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি বাঁধ। এ কারনে যে কোনো সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করে মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেটিজেনদের মধ্যে চলছে নানা ধরনের গুজব।

এ নিয়ে রংপুরে তিস্তাপাড়ের মানুষের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, তিস্তার পানি বাড়লেও আপাতত তেমন বন্যার শঙ্কা নেই। পাউবোর সূত্রমতে, শুক্রবার দুপুর ৩টায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

একই সময়ে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ২৮ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টের বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। সাম্প্রতিক গুজব ও বর্তমান তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা নদীর বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পাউবো জানায়, তিস্তা অববাহিকায় আপাতত ভারতের মধ্যে সবগুলো স্টেশন বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।

সামনে ৫ থেকে ৬ দিন বন্যা হওয়ার মত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম তিস্তা অববাহিকায়। সিকিম অঞ্চলে তেমন কোন বড় ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। তাই গজলডোভা ব্যারাজ খুলে দিয়েছে বা খুলে দিবে এরকম কোন গুজেবে কান দেওয়ার কিছু নেই। ধরলার নদীর জন্য এই একই কথা প্রযোজ্য। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের প্রধান গতিপথের উপর কোন ব্যারাজ বা ড্যাম  নেই ইন্ডিয়ান অংশে (২১ টা মত ব্যারাজ/বিরৎ আছে এর উপনদীতে)।

বাংলাদেশ অংশে যমুনা নদীতে প্রধানত বন্যা হয় আসাম, অরুণাচল, তিস্তা বেসিন, আর ভুটানের পানিতে। চায়না থেকে আসা পানির পরিমাণ খুব কম। তাই আসাম গেট খুলে দিয়েছে যমুনা ভেসে যাবে এ ধরনের গুজবে কান দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের এই অঞ্চলের বৃষ্টিপাতের ফোরকাষ্ট পানি বৃদ্ধির ইন্ডিকেশন দেয়না এবং যমুনার উপর ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের সব স্টেশনে পানি বিপদসীমার নিচে আছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘৪৮ ঘন্টায় তিস্তা নদীতে বন্যার কোন পূর্বাভাস নেই।

যদি এরকম ধরনের বন্যার সতর্কীকরণ থাকে তাহলে আমরা আগাম তা জানিয়ে দিব। সকালে একটু পানি বেরিয়েছিল তাও নেমে গেছে।

আমরা স্থানীয় লোকজনের অবগতির জন্য বলতে চাচ্ছি, আপনারা অযথা ফেসবুকে বিভ্রান্ত মুলক পোস্ট দেখে আতঙ্কিত হবেন না। তিস্তা আগাম কোন ধরনের বন্যার পূর্ব আভাস পাওয়ার সাথে সাথে আমরা জানিয়ে দেবো।’

এদিকে উত্তরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি বিশেষ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে বন্যার কোন সম্ভাবনা নেই আগামী ১ সপ্তাহ। গত ৩ দিন থেকে পূর্ব ভারতের সিকিম কিংবা আসাম রাজ্যের উপরে কোনো ভারি বৃষ্টি হয়নি। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীতে বন্যার কোনো সম্ভাবনা নোই কমপক্ষে আগামী ৪ দিন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি স্বাভাবিক সময়ের চয়েও নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে ফেসবুকের কোনো পোস্ট আপনার দৃষ্টিগোচর হয়ে যে পোস্টে দাবি করতেছে উত্তরবঙ্গে বন্যার সংবাদ সাথে-সাথে সেই পোস্টে চ্যালেঞ্জ করবেন ও ফেসবুকে রিপোর্ট করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS