গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গোবিন্দগঞ্জে জীনের বাদশার পল্লীতে এবার শক্তিশালী ঘাঁটি গেড়েছে হ্যাকার চক্র। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসীসহ সারা দেশের মানুষ। সেই সাথে আবারাও জিনের বাদশার মত গোবিন্দগঞ্জবাসীকে বিব্রত করে তুলেছে হ্যাকার চক্র। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রসাশনের সুষ্ঠু নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে এই চক্র।
স্থানীয়রা জাানান, এক সময় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত, তালুক কানুপুরসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের এক সময় জীনের বাদশার চক্রের ব্যাপক প্রভাব ছিল। এই জীনের বাদশার সদস্যরা দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়ে সর্বস্বান্ত করতো।
এই ইউনিয়নগুলোর গ্রামে গ্রামে এখনও জীনের বাদশার প্রতারণার অভিযোগে একাধিক মামলার আসামি রয়েছে। আবার বিভিন্ন জেলার অনেক নারী তাদের ফাঁদে পা দিয়ে টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার এই জীনের বাদশার সদস্যদের হাতে তুলে দিয়ে নি:স্ব হয়ে আর স্বামী সংসার ও প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যেতে পারেনি।
তারা এই চক্রের খপ্পরে পড়ে তাদের সংসারেই কারো না কারো স্ত্রী হয়ে থেকে যেতে বাধ্য হয়েছে। আবার জীনের বাদশার চক্রের খপ্পরে পড়ে একই সাথে মা-মেয়ের সম্ভ্রমহানির ঘটনাও অনেকের জানা। এ ঘটনার আলোচিত মামলা রায় হয়েছে মাত্র কিছুদিন আগে। এ ধরণের নানা ন্যক্কারজনক ঘটনার নজির রয়েছে। এখন নানা কারণে জীনের বাদশার সদস্যরা তাদের পেশার ধরণ বদলে ফেলেছে।
বর্তমানে উপজেলার এসব এলাকার জীনের বাদশার সদস্যরাই পেশা বদলে এখন হ্যাকার গ্রুপের সদস্য হয়েছে। এই গ্রুপের সদস্যরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডধারীদের কৌশলে মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তাদের নগদ একাউন্টের সমস্যা রয়েছে, ঠিক করার কথা বলে তাদের পিন নম্বর ও ওটিপি নম্বর কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে তার ভাতার অর্থ নিজের মোবাইল দিয়ে তুলে নেয়।
ভাতাভোগীরা ভাতা না পাওয়ার এ ধরণের অভিযোগ রয়েছে প্রচুর। সম্প্রতি ঢাকার গোয়েন্দা সংস্থার এক অভিযানে বেশ কিছু হ্যাকারকে শনাক্ত করে তাদেরকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। তারপরও এই চক্রের কার্যক্রম থেমে নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ না থাকায় ক্রমেই হ্যাকারদের এই কার্যক্রম বেড়ে চলেছে। তাদের অভিযোগ এই হ্যাকাররা এখন অনেক শক্তিশালী পর্যায়ে পৌছে গেছে। এখন তারা তাদের বাড়িতে হ্যাকার অফিস গড়ে তুলে সেখানে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে হ্যাকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরা এতো প্রভাবশালী যে গ্রামের কেউ তাদের এই কুকর্মের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম মন্ডল বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডধারীরা অত্যন্ত নিরীহ। হ্যাকারদের খপ্পরে পড়ে তাদের অর্থ চলে যাচ্ছে তাদের মোবাইলে। এজন্য তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।