ভিডিও

রংপুর পীরগঞ্জের গুলিবিদ্ধ অটোরিকশা চালক শাহীনুরের খোঁজ রাখেনি কেউ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৮:০৩ রাত
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৮:০৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ঢাকায় অটোরিক্সা মিছিলে অংশ নেয়া শাহীনুর হোসেন পুলিশের গুলিতে পঙ্গুত্ব বরণ করলেও কেউ তার  খোঁজ রাখেনি।

সাত সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম অসহায় শাহীনুর হোসেন (৪০) এখন চিকিৎসাহীন অবস্থায় গ্রামের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কুমেদপুর ইউনিয়নের রত্নেশ্বরপুর গ্রামের মৃত গোলজার হোসেনের ছেলে।

গত ২৩ আগস্ট সকালে রত্নেশ্বরপুর গ্রামের শাহীনুর  হোসেনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, টিনের চালার  একটি মাটির ঘর। কলাপাতা দিয়ে  ঘেরা বাড়ি ঘাস আর শেওলায় ভরে আছে। ওই বাড়িতে যে মানুষজন বসবাস করে না তা সহজেই বোঝা যায়।

গুলিবিদ্ধ শাহীনুরের খোঁজ চাইলে প্রতিবেশী জনৈক মহিলা জানান, তারা পাশের বাড়িতে আছেন। লোক মারফতে খবর দিলে আহত শাহীনুর তার বৃদ্ধা মায়ের ঘাড়ের ওপর ভর দিয়ে বাইরে আসেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকার জুরানে ভাড়া বাসাতে রয়েছেন।

তার সাথে কথা হলে জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে গত ২০ জুলাই আমরা দেড়শতাধিক অটোরিকশা চালক মিছিলে অংশগ্রহণ করি।

মিছিলটি ঢাকার শনির আখড়ায় পৌছলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে সামনে এগুতেই এলোপাতাড়ি গুলি। এতে আমরা কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে আর কিছুই মনে নেই। শাহীনুর বলেন, আমার কয়েকজন সাথী ওইদিন ঘটনাস্থলেই শহীদ হয়েছেন। আমাকেও মরা ভেবে কেউ নিতে আসেননি।

কিন্তু মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষে ফেরার পথে কয়েকজন মুসল্লি আমার নড়াচড়া দেখে স্থানীয় দুটি মেডিকেলে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হন। ও সময় আমার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে ওই অজ্ঞাতনামা মুসল্লিগণ আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। গুলি আমার বাম ঘাড়ের নিচে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

সাত ব্যাগ রক্ত লেগেছে। আমি এখনও জোরে কথা বলতে কিংবা হাঁটাচলাও করতে পারছি না। আমার চিকিৎসার জন্য পরিবারের লোকজন অনেক টাকা ধার-কর্জ করেছে, এ টাকা পরিশোধ করবো কি ভাবে?

শাহীনুরের মা রাজেকা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার এটাা নাতি পাভেল হোসেন সেও মানসিক ভারসাম্যহীন। কখন কি করে ওকে সামলানোয় দায়। নাতনি দুটে জীবিকার সন্ধানে অল্প বয়সে গার্মেন্টসে চাকরি করে। নাতি, নাতনি, বৌ, বেটা মিলে ৭ সদস্যের সংসার কিভাবে চলবে?

রংপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আরিফুল সরকার আরিফ জানান, প্রথমত গুলিবিদ্ধ শাহীনুরের মরার খবর পেয়েছি, পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি আছেন এবং বেঁচে আছেন।

অসহায় অটোরিকশা চালক শাহীনুর হোসেনকে দু’দিন আগে গ্রামের বাড়িতে এনে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করছি। কিন্তু সরকারিভাবে তার কপালে জোটেনি কোনো সাহায্য কিংবা অনুদান।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS