ভিডিও

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা থেমে নেই

প্রকাশিত: মে ০৩, ২০২৪, ০৭:২৫ বিকাল
আপডেট: মে ০৩, ২০২৪, ০৭:২৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থানের দুটি বন্ধুপ্রতীম দেশের সীমান্তে যে পরিবেশ বজায় থাকা উচিত, তা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নেই। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী তথা বিএসএফ’র বাংলাদেশি হত্যা কোনোভাবেই থামছে না। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেক নেতাই এই হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো প্রতিশ্রুতিই কাজে আসছে না।

সেগুলো যেন কেবলই কথার কথা। সর্বশেষ গত শুক্রবার ভোরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। পাটগ্রাম সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত এক মাসে লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে তিন বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা ঘটলো।

নিহত আবুল কালাম পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝলঙ্গি পকেট এলাকার অপির উদ্দিনের ছেলে। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, গত দশ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ৭০০ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এ তথ্য মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এর। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশিদের মানুষ হিসেবেই ভাবতে পারে না।

তাই মানবাধিকারের প্রশ্নটি তাদের কাছে নিতান্তই গৌণ। বাংলাদেশ ও ভারতের সংশ্লিষ্ট প্রায় প্রতিটি বৈঠকেই নাকি সীমান্তে হত্যা নিয়ে কথা হয়। কিন্তু প্রায় প্রতিটি বৈঠকেই বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ করা হবে। চোরাকারবারি বা এ ধরনের অপরাধীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে রাবার বুলেট ব্যবহার করা হবে। কিন্তু কোথায় সেসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন?

আর চোরকারবার ভারত থেকেও হয়। আমাদের সীমান্ত দিয়ে নিত্য ভারতীয় চোরাচালানীর পণ্য ঢুকছে। ঢুকছে মাদকদ্রব্য। গাজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা- মারাত্মক সব মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে চোরাপথে প্রবেশ করছে। দেশটা মাদকে ছেয়ে গেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ক’বার ভারতীয় চোরাচালানীদের ওপর গুলি চালিয়েছে? কয়জন ভারতীয় নাগরিক আমাদের সীমান্তে প্রাণ হারিয়েছেন- সেটা তুলনা করে দেখা উচিত।

আমরা কি শুধু আমাদের নাগরিকের লাশ কুড়োবো! একে কি দুই দেশের বন্ধুত্ব বলে? নিরীহ ও নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিটি ঘটনা আমাদের হৃদয়কে শোকাভিভূত করে। সেই শোক বিধ্বস্ত হৃদয় নিয়েও আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষায় এবং সম্পর্কের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আর কত লাশ? আর কত দু:খ প্রকাশ, আর কত প্রতিশ্রুতি কথা আমাদের শুনতে হবে!

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও ভারত সরকারের রয়েছে সুসম্পর্ক। তাহলে সীমান্তে কেন এই হত্যা ? চীন-পাকিস্তান ভারতের ঘোষিত শত্রু দেশ। তাদের সীমান্তে কখনও এমন এক তরফা গুলিতে মানুষ মরে না। তাহলে আমরা বন্ধু দেশ হয়েও ভারতের কাছ থেকে এত লাশ গ্রহণ করতে হবে কেন? যারা অপরাধ সংঘটিত করে। তাদের জন্য দু’দেশেরই সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে।

সেই আইনের আলোকেই নেয়া যেতো ব্যবস্থা। অবশ্য এমন অনেক উদাহরণও রয়েছে যে, নিরীহ নিরপরাধ বাংলাদেশিকেও হত্যা অথবা নির্যাতন করেছে বিএসএফ। ভারত সরকারকে তার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর এই অপতৎপরতা বন্ধে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে।

নতুবা এই হত্যাকান্ড বন্ধ করা যাবে না। আমাদের বিশ্বাস, সরকার সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর বিএসএফ’র অমানবিক আচরণকে গুরুত্ব সহকারে নেবে এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বেআইনি তৎপরতা রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS