ভিডিও

অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ

প্রকাশিত: আগস্ট ০৯, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আপডেট: আগস্ট ০৯, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত শপথ অনুষ্ঠানে প্রথমে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট মো: সাহাবুদ্দিন। পরে ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ গ্রহণ করেন। তিন উপদেষ্টা ঢাকার বাইরে থাকায় তারা পরে শপথ নেবেন বলে জানানো হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া এক বার্তায় সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি সাহসী ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই, যারা আমাদের দ্বিতীয় বিজয় দিবসকে বাস্তবে রূপ দিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং অভিনন্দন জানাই দেশের আপামর জনসাধারণকে যারা ছাত্রদের এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

নতুন এই বিজয়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে সবাইকে এগিয়ে আনার আহবান জানিয়ে এই নোবেল জয়ী বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রকার ভুলের কারণে এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়। আমি সবাইকে বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংসতা বন্ধের আহবান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেয়া বার্তায় ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের সবারই শত্রু। সবাই থাকুন এবং দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসুন।

অনুগ্রহ করে নিজে শান্ত থাকুন এবং আশে পাশের সবাইকে শান্ত থাকতে সাহায্য করুন। সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অত্যন্ত বিচক্ষণ একজন ব্যক্তি, তিনি জনকল্যাণে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে সারাদেশে যে অরাজক পরিস্থিতি হয়েছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন। এ জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সবই করতে হবে নতুন সরকারকে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর মানুষের প্রত্যাশা অনেক। ইতিপূর্বে জনগণ যে সংকটের মোকাবিলা করেছে তা ভয়াবহ। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ সব খানে সিন্ডিকেট। দ্রব্যমূল্যের কারণে মানুষ যেন চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গিয়েছিল। অন্তবর্তী সরকার এ মুহূর্তে দেশটা এমন করে গোছাতে শুরু করবেন যাতে মানুষ গণতন্ত্রের স্বাদগ্রহণ করতে পারে। সমাজে দুর্নীতির যে শেকড় গেড়েছিল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকেরা সেসব দুষ্ট শেকড় উপড়ে ফেলে সমাজ থেকে ঘুষ-দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিক হবেন এমন প্রত্যাশা সবার।

একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসসহ যারা রাষ্ট্র পুনর্গঠনে এগিয়ে এসেছেন। যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় শপথ নিলেন তাদের আমরা প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাই। দেশ পরিচালনায় তাদের সাফল্য কামনা করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নতুন সরকারের প্রথম কাজ হবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি আনা। দেশ সংস্কার করার সময় এসেছে। দেশের ছাত্র-জনতা এই সংস্কার আন্দোলনের পটভূমিতে তা দেখিয়ে দিয়েছেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশাসনকে দলীয় মুক্ত করা জরুরি। সেখানে শৃঙ্খলার ফিরিয়ে আনতে হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সৎ ও দক্ষ কর্মি নিয়োগ দিয়ে একটি কার্যকর ও গতিশীল প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে হবে। এ জন্য সবার আগে দরকার আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গুণগত পরিবর্তন আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রতিটি সেক্টরে জন-অংশগ্রহণ বাড়িয়ে এই সংস্কার কাজগুলো করতে হবে।

সর্বোপরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এসব মানুষ সবাই নিজ গুণে দেশে প্রতিষ্ঠিত। দু:সময়ে তাদের এই হাল ধরায় মানুষ আশাবাদী। আমরা আশা করি, দেশে দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসুক। জনকল্যাণে দেশ সঠিক পথে এগিয়ে চলুক-জনগণ শান্তি চায়, স্বস্তি চায়। দুর্নীতিমুক্ত একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দেশের গণতন্ত্র প্রিয় প্রত্যেক নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS