ভিডিও

পিছিয়ে থাকা বগুড়াকে এগিয়ে নেয়ার দাবি

আবদুর রহমান টুলু

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৪, ০৬:১২ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২৪, ০৬:১২ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা বগুড়াকে এগিয়ে নেয়ার দাবি জেলাবাসির। জেলার উন্নয়নে পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা, বিমানবন্দর, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন, সবজি হিমাগার, কমপক্ষে চারটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, যমুনা নদীতে ট্যুরিস্ট স্পট নির্মাণ, সার কারখানা স্থাপন, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আধুনিকায়ন, করতোয়া নদী সংস্কার, শহরের যানজট নিরসন, কাঁচা সড়ক পাকাকরণ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ফিরিয়ে আনা, খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, বিনোদন স্পট, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মঞ্চ নির্মাণ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেলা গড়ে তোলা।

এছাড়াও জেলাবাসির দাবি নতুন ফুটবল স্টেডিয়াম ও নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করা। তরুণরা যেন ক্রীড়ামুখো হয়ে দেশের সুনাম আরো বৃদ্ধি করে। নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এমন প্রত্যাশা বগুড়ার সর্বস্তরের জনসাধারণের।

জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের রাজধানী হিসেবে খ্যাত বগুড়া। বগুড়ার উন্নয়ন আসলে খাতা কলমে থাকলেও চোখে পড়ার মত কোন উন্নয়ন হয়নি। ছাত্র জনতা আন্দোলনের পর বগুড়াবাসি নতুন এই সরকারের হাতে বগুড়ার উন্নয়ন দেখতে বিভিন্ন দাবী জানিয়েছেন।

বগুড়াবাসি দাবি করেছেন, পিছিয়ে পড়া জেলার সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করে যাবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন সরকার গঠন হওয়ায় মানুষের মাঝে প্রত্যাশা বেড়েছে। জেলাজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সর্বত্রই হচ্ছে আলোচনা। শস্য উৎপাদনে বগুড়া জেলা অন্যতম।

প্রতিবছর জেলায় ২০ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়। সংরক্ষণের অভাবে চাষিরা দাম পান না। আবার সময়মত বিক্রি করতে পারেন না বলে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে জেলায় আধুনিকমানের সবজি হিমাগার স্থাপনের দাবি তুলেছেন তারা। বগুড়ায় সম্ভাবনা থাকার পরেও বাণিজ্যিকভাবে উড়ছে না বিমান। ১৯৯৬ সালে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া নামকস্থানে বগুড়া ষ্টল বিমানবন্দর নির্মাণ  শুরু হয়।

২০০০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল বাণিজ্যিকভাবে বিমান উড়ার বিষয়টি সরজমিনে দেখে যাওয়ার পরেও বিমান ওড়ার কোন খবর নেই। দীর্ঘ ২৫ বছর অপেক্ষায় থেকেও বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালু না হওয়ায় বগুড়াবাসিও আশাহত হয়েছেন। উত্তরের ১৬ জেলার অর্থনীতির গতি বাড়াতে বিমানবন্দর চালু করা অত্যন্ত জরুরি।

অজ্ঞাত কারণে বিমানবন্দরটি আজও চালু হয়নি। অথচ বিমানে ওড়ার স্বপ্ন দেখছেন বগুড়াসহ উত্তরের মানুষরা। বগুড়া বিসিকে নতুন প্লট বরাদ্দ বন্ধ হয়ে আছে দুই দশক ধরে। কলকারখানা ও শিল্পের জায়গা সংকট এজন্য দ্বিতীয় শিল্প নগরী গড়ে তোলা জরুরি। আধুনিক যুগেও বগুড়া থেকে সরাসরি সিরাজগঞ্জ জেলার সাথে রেলপথ স্থাপন না হওয়ার কারণে ৮ ঘন্টা রেলপথ ঘুরে ঢাকা পৌঁছাতে হয়।

আর এই রেলপথ স্থাপন হলে ৩ থেকে ৪ ঘন্টায় ঢাকা পৌঁছাবে বগুড়াবাসি। জেলা শহরে মাত্র দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সন্তান ভর্তি নিয়ে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আরো দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে কিছুটা দুর্ভোগ কমে যাবে। বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চল কৃষি এলাকা সে কারণে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদান করলে ফলন বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক গতি বৃদ্ধি করতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বহমান যমুনা নদীকে ঘিরে আধুনিক ট্যুরিস্ট স্পট নির্মাণ করা জরুরি।

এছাড়া বগুড়া পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা, সার কারখানা স্থাপন, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আধুনিকায়ন, করতোয়া নদী সংস্কার, শহরের যানজট নিরসন, কাঁচা সড়ক পাকাকরণ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ফিরিয়ে আনা, খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, বিনোদন স্পট, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মঞ্চ নির্মাণ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণসহ মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জেলাবাসির।

জেলাবাসির আরও দাবি নতুন ফুটবল স্টেডিয়াম ও নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ। তরুণদেরকে শিক্ষার পাশাপাশি মাঠ করে গড়ে তোলা। বগুড়ার অধিকাংশ স্থানে নদী দূষণ, দখল, ভরাট, চাষের আওতায় নেয়া, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানিপ্রবাহ না থাকায় এখন মৃতপ্রায় নদীতে পরিণত হয়েছে। উত্তরে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থেকে বগুড়ার দিকে করতোয়া নদীর প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে। নদীর নাব্যতা ফেরাতে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজ করার দাবী জানানো হয়েছে।

উন্নয়ন কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে বগুড়া একটি অর্থনৈতিক জেলা হিসেবে গড়ে উঠবে। এখন আধুনিক সময়ে বগুড়াকে এগিয়ে নিতে সকলকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বিমানবন্দর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র, কৃষির উন্নয়নে কাজ করতে হবে। নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এমন প্রত্যাশা বগুড়ার সর্বস্তরের জনসাধারণের।

বগুড়ায় বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণার মধ্যে দিয়ে জেলাকে আধুনিক জেলা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি সকলের। খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য আধুনিক হল নির্মাণ, সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আরো আধুনিকায়ন করা।

সেই সঙ্গে করতোয়া নদীতে যে সংস্কার কাজ চলছে তার বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৮০ কিলোমিটার জুড়ে নদীর যৌবন ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সাথে শহরের যানজট নিরসন, কাঁচা সড়ক পাকাকরণ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ফিরিয়ে নিয়ে আসা।


লেখক : সিনিয়র রিপোর্টার
বাংলাদেশ প্রতিদিন, বগুড়া অফিস

tulubogra@yahoo.com

01712-684564



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS