ভিডিও

‘চিকিৎসার নামে মানুষ হত্যায় জড়িত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি’

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত
আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৮:৪৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আজ শনিবার ২৪.০৮.২০২৪ইং তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চিকিৎসার নামে মানুষ হত্যায় জড়িত চিকিৎসক ও হাসপাতালের শাস্তির সাত দফা দাবিতে “জাস্টিস ফর শিমুল” এর ব্যানারে  অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন নিহতের স্বজনরা। এতে তারা তাদের সাত দফা দাবী তুলে ধরেন। 
নাকের সামান্য সেফপ্টো প্লাস্টিক সার্জারিতে কি করে রোগীর মৃত্যু হয়? এটি সম্পূর্ণ রূপে সার্জন প্রফেসর ডা. জাহের আল-আমীন এবং এনেস্থেশিয়ান ডা. ইফতেখার এর গাফেলতির কারণে হয়েছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারকে সকল দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। 
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির ও নিউমার্কেট  জোনের অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার রাফায়েতের যোগসাজেশে রিমান্ডের প্রেয়ার দেওয়া হয়নি। তাই ডাক্তার জহির আল-আমিন জামিনে মুক্তি পায় লাশ দাফনের আগেই। অতএব আমরা থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির ও নিউমার্কেট জোনের অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার রাফায়েতের এর ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। 
যেহেতু অভিযুক্ত একজন চিকিৎসক। তিনি যেন তার সংশ্লিষ্ট সহকর্মী দ্বারা পোস্টমোর্টাম (ময়নাতদন্ত) রিপোর্ট ম্যানুপুলেট করা হতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

হাসপাতালের কার্যক্রম মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধীদপ্তর কর্তৃক স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে যেন ভবিষ্যতে অন্যকোন পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। 

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 

অভিযুক্ত সার্জন প্রফেসর ডা. জাহের আল-আমীন এবং এনেস্থেশিয়ান ডা. ইফতেখার  সনদ বি.এম.ডি.সি কর্তৃক স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে এবং ডাক্তারের দৃষ্টান্তমৃলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের সকল প্রাইভেট হাসপাতালের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধীদপ্তর কর্তৃক মেডিকেল টিম গঠন করতে হবে এবং তা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যে প্রাইভেট হাসপাতাল চিকিৎসা প্রদানে অনুপোযোগী সেই হাসপাতালগুলোর পরিচালনা লাইসেন্স দ্রুত বাতিল করতে হবে যেন কোন রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার না হয়।

উল্লেখ্য যে, ঢাকার গ্রিন রোডে অবস্থিত কমফোর্ট হাসপাতালে সেফটোপ্লাস্টি সার্জারি করার সময় কর্তব্যরত ডাক্তার এবং সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, উদাসীনতা এবং সর্বোপরি ভুল চিকিৎসার কারণে বাংলাদেশ কর্পোরেট সেক্টর এর আইকন, অটবি ফার্নিচার কোম্পানির সাবেক জেনেরাল ম্যানেজার, এসি আই গ্রুপের সাবেক ডিরেক্টের এবং মিনিস্টার- মাইওয়ান গ্রুপের সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক জনাব সামসুদ্দোহা শিমুল এর অকাল মৃত্যু ঘটে। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করায় মৃত্যুর প্রতিবাদে গত ২১.০৮.২০২৪ তারিখে মৃত ব্যক্তির পক্ষে বাদী হয়ে জনাব রিয়াজ ইসলাম (ভাগ্নে)  কলাবাগান থানায় কমফোর্ট হাসপাতালের ডাক্তার ড. জাহির আল-আমীনকে প্রধান আসামী করে মোট ৪ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করে। ২২/০৮/২০২৪ তারিখে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার পূর্বেই আসামীদের কোর্টে তোলা হলে মামলাটি বিচার বিশ্লেষণ করে মহামান্য আদালত প্রধান আসামীসহ বাকীদেরকে জামিন মঞ্জুর করেন।  
উল্লেখ্য, কলাবাগান থানার মামলার নম্বরটি ২(৮) ২০২৪। মামলা করার সময় আসামীদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয় সেজন্য থানার অফিসার ইনচার্জ  জনাব আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবিরকে বারবার মামলাটির ধারা পরিবর্তন করে দেওয়ার বাদী পক্ষ থেকে অনুরোধ করলেও কোন এক অজ্ঞাত কারণে ধারা পরিবর্তন না করে মামলাটি বাংলাদেশ ধন্ডবিধি আইনের ৩০৪ এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী রুজু করেন। উক্ত ধারা অনুযায়ী একজন আসামীর  সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর এবং সর্বনিম্ন ২ বছর হয় যা অত্যন্ত প্রহসনমূলক এবং সুষ্ঠ বিচারের পরিপন্থী।  
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির(মোবাইল নংঃ ০১৩২০-০৩৯৬৩৩/০১৯২০-৯০২১৩৩), এস আই জয়নাল, আই ও (মোবাইল নংঃ ০১৭১৬-৬২৯৯২৩)    এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ (মোবাইল নংঃ ০১৭১৩-০১৩০৭৭)   বলেন, দয়া করে ওসি এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এর ফোন নম্বরে কল করে তার বক্তব্যটি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।  
এর আগে, গত ২১.০৮.২০২৪ দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকার গ্রিন রোডে অবস্থিত কমফোর্ট হাসপাতালে সেফটোপ্লাস্টি সার্জারি করার জন্য জনাব সামসুদ্দোহা শিমুলকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কর্তব্যরত ডাক্তার জনাব ড. জাহির আল-আমীন এবং ইফতেখারুল কাওসার ( যিনি এনেস্থেসিয়া দেন) রোগীর অপারেশন করতে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। সাধারণত উক্ত অপারেশন শেষ করতে সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট লাগলেও ডাক্তার অনেক সময় নেওয়ায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা উদগ্রীব হয়ে  সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রথমে তারা বলতে অস্বীকার করলেও কর্তব্যরত ডাক্তার উপায়োন্তর না পেয়ে এক পর্যায়ে ওটি থেকে বের হয়ে স্বজনদের জানায় রোগী মারা গেছে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ঐ ডাক্তার তাৎক্ষনিক আত্মগোপনে চলে যায় । পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঐ ডাক্তারকে অজ্ঞাত জায়গা থেকে বের করে লোক দেখানো পুলিশের হাতে সোপার্দ করে দেন। 
উল্লেখ্য, উক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা করার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে তিনি এক মহিলা রোগীর কানের ভুল সার্জারির করার কারণে তার চিকিৎসা করার লাইসেন্স এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল যা এখনো আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে বলে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। এমন একজন ডাক্তার কি করে উক্ত হাসপাতালে ডা. হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ এবং কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানিয়েছে ভোক্তভোগীর স্বজন, চিকিৎসারত রোগী ও তাদের স্বজনরা। 
গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) জুমার নামাজের পর সামসুদ্দোহা শিমুলের জানাজা শেষে চুয়াডাঙ্গার জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে তার বাবা মা এর কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন হয়। 
যেহেতু সামসুদ্দোহা শিমুলের লাশ দাফন সম্পন্ন হওয়ার আগেই আসামীরা জামিন পেয়েছেন তাই এর প্রেক্ষিতে এবং  সঠিক বিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় আজকে আমরা এই অবস্থান কর্মসূচী গ্রহণ করেছি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS