অভি মঈনুদ্দীন: পালা গান ও লোক গানে গেলো ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে শিল্পী মুগ্ধতা ছড়িয়ে আসছেন তিনি মুক্তা সরকার। কিছুদিন আগেই তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করতে গিয়েছিলেন, আজই দেশে ফিরেছেন তিনি।
মুক্তা সরকার জানান এবারের ইউরোপ সফরে তিনি সুইডেন, ফিনল্যাণ্ড, ইতালী, পর্তুগাল ও ফ্রান্সে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। এবারের ইউরোপ সফর তার সঙ্গীত জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সফর হিসেবেই বিবেচনা করেন মুক্তা সরকার।
মুক্তা সরকার বলেন,‘ দেশে কিংবা বিদেশে হোক বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সঙ্গীত পরিবেশন করতে আমি আমার বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্যকেই তুলে ধরি। যারা আমাকে নিমন্ত্রণ করে ইউরোপ ট্যুরে নিয়েছেন তারা জেনেই নিয়েছেন যে আমি বাংলার মাটির গান, মানুষের গান গাইবো। তাই প্রতিটি শো’তে সঙ্গীত পরিবেশন করতে গিয়ে অনেক সময় আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেছি শ্রোতা দর্শকের ভালোবাসায়। আমার প্রিয় জন্মভূমি আমার প্রিয় বাংলাদেশের কতো হাজার হাজার মানুষ শুধু পরিবারের কথা চিন্তা করেই দেশের বাইরে থাকেন। তাদের মনে গানে গানে একটু শান্তি দেবার জন্য, একটু ভালোলাগা সৃষ্টির জন্যই এই ট্যুরে আমার আসা। আয়োজকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ এই ইউরোপ ট্যূরে আমাকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে।’
পালা ও লোকগানে অর্থাৎ শরীয়তী-মারফতি গানে মুক্তা সাহা’র দেশের অভ্যন্তরেই রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। মুক্তা সরকারের মিষ্টি দরদী কন্ঠ একবার যে এলাকার গান পাগল শ্রোতা দর্শক উপভোগ করেছেন, বারবার তারা তাকে নিমন্ত্রণ জানাতে চান তাদের এলাকায়। মুক্তা সরকারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মতলবের ষাটনলে। তার বাবা হযরত আলী সরকার গান করতেন। তার মাও টুকটাক গান করতেন। তবে মুক্তার নানা সিদ্দিক ও মুক্তার বাবার আগ্রহেই মূলত মুক্তা সরকারের গানে প্রবল আগ্রহ তৈরী হয়। মতলবে গানের যে উৎসব হতো সেখানে গিয়েই মূলত গানের প্রতি মুক্তার প্রবল আগ্রহ জন্মায়। মুক্তার শিক্ষা গুরু হলেন আকলিমা বেগম ও আলেয়া বেগম। তরঙ্গ ব্যানার থেকে মনির হোসেনের সঙ্গীতে মুক্তার প্রথম অ্যালবাম জ্বালায় জ্বালায় অঙ্গ জ্বলে’ অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়। এরপর দুই শতাধিক গানের অ্যালবাম তার প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে মুক্তার অনেক প্রিয় শিল্পী রয়েছে। তবে মায়ের আদর স্নেহে তাকে যিনি আগলে রাখেন তিনি হলেন বাউল সম্রাজ্ঞী মমতাজ। মমতাজ তাকে অনেক স্টেজ শো’তে সঙ্গে নিয়েছেন।
মুক্তা সরকার বলেন, ‘ আমি মহান আল্লাহর কাছে জীবনে যা চেয়েছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। আমি তাতেই সন্তুষ্ট। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে শ্রোতা দর্শকেরা আমার গান প্রবল আগ্রহ নিয়ে শোনেন, এটাইতো জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। শ্রোতাদের ভালোবাসাকে সঙ্গী করেই আগামী দিনগুলোতে গান করে যেতে চাই। ’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।