অভি মঈনুদ্দীন : একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তী অভিনেতা, নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক মামুনুর রশীদ নতুন একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করছেন। নাটকের নাম ‘চরণ ছুঁয়ে যাই’। নাটকটি রচনা করেছেন তিনি নিজেই।
এরইমধ্যে নাটকটির ত্রিশ পর্ব নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছেন বলে তিনি জানান। মামুনুর রশীদ বলেন,‘ চরণ ছুঁয়ে যাই মূলত একটি স্কুলের নানান সমস্যাকে কেন্দ্র করেই নাটকের গল্প। এতে আমি স্কুলের একজন প্রতিষ্ঠাতার চরিত্রে অভিনয় করেছি। এরইমধ্যে নাটকটির ত্রিশ পর্ব নির্মাণ কাজ শেষ করেছি। এটি ৫২ পর্ব পর্যন্ত নির্মাণ করবো আমি। এরপর চ্যানেল আইতে জমা দিবো। নাটকটি চ্যানেল আইতে প্রচারের জন্যই নির্মিত হয়েছে। আর এরমধ্যে আরো একটি ধারাবাহিক নাটকে আমি অভিনয় করছি। নাটকটি নির্মাণ করেছেন সাজিন আহমেদ বাবু। বাবুর পরিচালনায় এর আগেও আমি নাটকে অভিনয় করেছি। বাবু অত্যন্ত ভদ্র ও ঠাণ্ডা মাথার একজন পরিচালক। আমার তার নির্দেশনায় তার ইউনিটে কাজ করতে খুউব ভালো লাগে। ’
সাজিন আহমেদ বাবু পরিচালিত ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ নাটকে গল্পের কেন্দ্রীয় একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন মামুনুর রশীদ। নাটকটি রচনা করেছেন শফিকুর রহমান শান্তনু। নাটকটি এনটিভিতে প্রচার হচ্ছে। ১৯৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মামুনুর রশীদ টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির পাইকড়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পুরকৌশল বিভাগে ডিপ্লোমা করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
১৯৬৭ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখতে শুরু করেন যার বিষয়বস্তু ছিল মূলত পারিবারিক। সেসময় কমেডি নাটকও তিনি লিখতেন। নাট্যশিল্পের প্রতি তার প্রকৃত ভালোবাসা শুরু হয় টাঙ্গাইলে তার নিজ গ্রামে যাত্রা ও লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে তার নিবিড় পরিচয়ের সূত্র ধরে। তার যাত্রার অভিনয় অভিজ্ঞতা তার নাট্যভাবনাকে খুবই প্রভাবিত করেছিল। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং জড়িত হন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি তার প্রথম রচিত নাটক ‘পশ্চিমের সিঁড়ি’ কলকাতার রবীন্দ্রসদনে মঞ্চায়নের চেষ্টা করেন; কিন্তু তার আগেই ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনতা অর্জন করায়, নাটকটি আর তখন অভিনীত হয়নি। পরে নাটকটি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে অভিনীত হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর শুরু হয় তার আরেক নাট্যসংগ্রাম ‘মুক্ত নাটক আন্দোলন’। ১৯৭২ সালে কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে তিনি তৈরি করেন তার আরণ্যক নাট্যদল। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘কীতত্তনখোলা’,‘ আঁধিয়ার’,‘মনপুরা’,‘প্রিয়তমেষু;,‘মৃত্তিকামায়া’,‘রূপকথারগল্প’‘,নদীজন’, ‘মায়াবতী’,‘দেশান্তর’,‘আলতাবাণু’ ইত্যাদি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।