ভিডিও

ঘুমানোর আগে ফোন ঘাঁটাঘাঁটির অভ্যাস মানসিক চাপ বাড়ায় 

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৫:৪১ বিকাল
আপডেট: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৫:৪১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

লাইফস্টাইল ডেস্ক : জীবনে পরিবর্তন আনতে চাইলে সকালে উঠেই মোবাইল ফোন দেখা বাদ দিতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ফোন ‘ঘাঁটাঘাঁটি’র অভ্যাস মানসিক চাপ বাড়ায়।

এমনই অভিজ্ঞতা ক্যালিফোর্নিয়া’তে অবস্থিত ‘মিডিয়া সাইকোলজি রিসার্চ সেন্টার’ পরিচালিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে ‘ভার্চুয়াল’ জগতের থেকে বাস্তব দুনিয়ার কোনো কিছুতে জড়িয়ে পড়লে, নিজের মধ্যে যে শক্তির অনুভূতি ঘটে সেটা দিয়ে অনেক কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব। দিনের শুরুটাই করা যায় ইতিবাচক অনুভূতি নিয়ে। যা নতুন কিছু করার উৎসাহ যোগায়, প্রাণোচ্ছলতা বাড়ায়।

জেগে ওঠাতে সমস্যা : ঘুমের আগে মুখের কাছে ফোন ধরে থাকলে সকালে উঠতে কষ্ট হতে পারে।
ফোন থেকে নির্গত হওয়া ‘ব্লু লাইট’ বা নীল আলো মানসিক চাপ বৃদ্ধির হরমোন কর্টিসলের মাত্রা বাড়ায়। কর্টিসল হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে, ফলে উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রবণতা বাড়ে, শঙ্কা কাজ করে বেশি।
শুধু আলো নয়, ফোনে দেখা নানান ‘কনটেন্ট’ যথেষ্টভাবে মনে প্রভাব ফেলে। খারাপ বিষয় হল, অনলাইনের দ্বন্দ্ব বা তথ্য প্রবাহ দেহের এবং মনের যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি খরচ করে দেয়। আর দিনের প্রথমভাগেই সেই শক্তি খরচ করার কোনো মানে হয় না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘অ্যালগারিদম’ এমনভাবে করা যা মনোযোগ ধরে রাখে। নেতিবাচক বিষয়গুলো দ্রুত আটকে ফেলে, আর সেসবের দিকে ধাবিত হতে উৎসাহ দেয় বলেন মনোবিজ্ঞানীরা।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে দিনের শুরুতে নিজেকে যখন ঠিক মতো খাপ খাওয়াতে ব্যস্ত হওয়া উচিত, সেই সময়ে এই ধরনের ‘কনটেন্ট’ দেখার ফলে নেতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। সেই সাথে দিনের বেশিরভাগ সময় অলস ও উদাসীন অনুভূতি কাজ করে।
আপনি ফোনের মালিক, ফোন আপনার মালিক না : এমন না যে, সব সময় ফোন ব্যবহার করা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠার অ্যালার্ম হিসেবে বা সময় দেখার প্রয়োজন পড়লে ফোন ব্যবহার করা যেতেই পারে। আবহাওয়া কিংবা যানজটের অবস্থা বুঝতে ম্যাপ দেখা।

তবে এসব জরুরি জিনিস দেখার পর যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, খবর ইত্যাদি বিষয়গুলোতে চোখ বুলানো শুরু করেন তবে মানসিকভাবে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া দিন শুরু করলে, অর্থহীন বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ না গিয়ে বরং কী দেখলে মন ভালো হবে সেসব বাছাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়। আরেকটি বিষয় হল, মানুষ স্বভাবগতভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা প্রাণী। তাই কোনো কিছু দেখলে বা কারও মন্তব্যে প্রতি উত্তর দেওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায় না। তাই ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক বিষয়টা বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রায়ই ভুলে যাই ফোনটার মালিক আমি, বরং মনে হয় উল্টোটাই সত্যি।

পরিবর্তনের জন্য যা করা যায়: দিনের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এড়িয়ে যাওয়াটা ভালো পন্থা। তবে মনের মধ্যে শঙ্কাও কাজ করতে পারে, না জানি কত কিছু হয়ে যাচ্ছে। আর নটিফিকেইশনের আলো জ্বলে উঠলে হাতটা চলে যায় ফোনের দিকেই। এই অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনের প্রথমভাগের কাজগুলো শেষ না করে ফোন দেখবো না, এরকম সিদ্ধান্তে অটল থাকতে রাতেই ফোন ‘এয়ারপ্লেন মুড’য়ে রাখা যেতে পারে। অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপগুলো আপাতত বন্ধ করে রাখা যায়।

সকালে বাস্তব দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক গড়লে সত্যিকার অর্থে উপকার পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি দেহ ও মনকে সারাদিন সামলানোর জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত করা যায়- মন্তব্য করেন এই মনোবিজ্ঞানী।
এমনকি দিনের অন্যান্য সময়ে ফোন চালু থাকা অবস্থায়, সামনের মানুষটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে বেশি। যেমন- সন্তান, সঙ্গী, পরিবার, বন্ধুবান্ধব। যে বিষয়টা আকর্ষণ জাগায় সেটা দেখলে মস্তিষ্ক বেশি মাত্রায় কার্যকর হয়। ফলে ঘুম আসতে সমস্যা হবেই। স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস গড়ার জন্য বলাই হয়- যেসব বিষয় উত্তেজনা তৈরি করে সেগুলো থেকে শোয়ার সময় দূরে থাকতে হয়। তাই ফোন ব্যবহারে সীমা নির্ধারণ করা যেতে পারে। ‘হোম স্ক্রিন’ থেকে অ্যাপগুলো সরিয়ে ফোনের ভেতর রাখা উচিত যাতে খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। পাশাপাশি অ্যাপগুলো ‘ফোর্স স্টপ’ করে রাখা যেতে পারে, যেন কোনো ‘নোটিফিকেশন’ না আসে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS