বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অনেক জেলার নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে কয়েকটি জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে। সিলেট বিভাগে এ বছর দ্বিতীয় দফার বন্যায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকাবাসী। উত্তরের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় লালমনিরহাট, রংপুর জেলার নদী তীরবর্তী নিচু এলাকার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা বড় ধরনের বন্যার ধকলের আশঙ্কা করছেন। এদিকে টানা ভারী বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলাগুলোসহ কক্সবাজার জেলায়ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা বাড়ছে। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটছে।
নেত্রকোনায় সব নদীর পানি বিপদসীমার উপরে
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি চলে আবারো জেলার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সীমান্তবর্তী সুসং দুর্গাপুরের পাহাড়ি সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৫.৮৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও কলমাকান্দার উব্দখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৬.৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া জেলার প্রধান নদী কংশ ও ধনু নদসহ গণেশ্বরী, মহাদেও, মঙ্গলেশ্বরী, মগড়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নদীর দুই কূল উপচে ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অসংখ্য নারী-পুরুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানিবন্ধী এলাকায় খাদ্যাভাব ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জানা যায়, জেলার মদন, খালিয়াজুরি, মোহনগঞ্জ, কলমাকান্দা, বারহাট্টাসহ আরো কয়েকটি উপজেলার অন্তত প্রায় ৬০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ঢলের পানি বাড়তে শুরু করায় বিভিন্ন স্থানের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বন্যা মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
খাগড়াছড়িতে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনী নদীসহ বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কয়েকশ’ পরিবারের পানিবন্দী হওয়াসহ সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। আটকা পড়ে আছেন খাগড়াছড়িসহ সজেক ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে রাঙ্গামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে সাজেক-খাগড়াছড়ি সড়কের বাঘাইহাট বাজার, মাচালং বাজারসহ একাধিক স্থানে সড়কের ওপরে পানি উঠে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পর্যটকবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাজেকে আটকা পড়েছে শতাধিক পর্যটক। খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কের মহালছড়িসহ কয়েকটি স্থানে সড়কের উপর পানি উঠে পড়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নৌকা ঠেলাগাড়ি ও ভ্যান দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পরীক্ষার্থীরা। এদিকে ভোরে খাগড়াছড়ি-ঢাকা ও চট্টগ্রাম সড়কের মাটিরাঙ্গার সাপমারা এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসের পর এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে করে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নাইট কোচসহ অনেক যানবাহন আটকা পড়ে।
জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, ভারী বৃষ্টিতে শহরের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে এমন এলাকার লোকজনদের নিরাপদ স্থানে যেতে একাধিকবার মাইকিং করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
তিস্তার পানি ফের বাড়ছে
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি আবারও বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে একই পয়েন্টে দুপুর ১২টায় বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই ৩ ঘণ্টায় পানিপ্রবাহ বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন তিস্তাবাসী।
এর আগে গত রোববার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপদসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সোমবার ওই পানি আবারও কমে যায়। পানি বৃদ্ধিতে জেলার ৫ উপজেলার নদী-তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও তিস্তা চরাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়ে। পানি নিয়ন্ত্রণে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট এখনো খুলে রেখেছেন কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, তিস্তার পানি বাড়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। চর এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তবে সোমবার সকাল থেকে পানি কমে যাওয়ায় রাস্তাঘাট জেগে উঠে, অনেক বাড়িঘর থেকে নেমে যায় পানি। তবে কাদাযুক্ত রাস্তাঘাট ও ঘর বাড়িতে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নি¤œাঞ্চলের মানুষজন। গরুর প্রধান খাদ্য খড় ভিজে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন গবাদিপশু নিয়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদী-তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েন। সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ইউনিয়নের নদী-তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। তবে দ্রুত গতিতে পানি নেমে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরে আসে নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চল মানুষদের। কিন্তু মঙ্গলবার বিকাল থেকে পানি আবারও বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
দোয়ারাবাজারে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ৫ দিনের টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে দেখা দিয়েছে তৃতীয় দফার বন্যা। সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি ও খাসিয়ামারাসহ সকল নদ-নদীর উপচে পড়া ঢলে কানায় কানায় ভরে গেছে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়ক। নি¤œাঞ্চলের মাঠঘাট তলিয়ে গেছে। উপজেলা সদরের সাথে সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বোগলা, নরসিংপুর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার নতুন নতুন বিভিন্ন গ্রামের অনেক বাড়িঘরের আঙিনায় আবারও পানি উঠতে শুরু করেছে। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি নামার আগেই ফের বন্যার অশনি সঙ্কেতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন লোকজন। এ দিকে মঙ্গলবার সকালে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের স্রোতে উপজেলা সদরের সুরমা নদীতে খেয়া নৌকা ডুবে শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল কয়েক ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে নেমেছে উজানের পাহাড়ি ঢল। এ কারণে দোয়ারাবাজার উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। নদী-তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যার পানি ঢুকেছে।
চকরিয়া-পেকুয়ায় জলাবদ্ধতা
চকরিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, চকরিয়া ও পেকুয়ায় তিন দিনের প্রবল বর্ষণ এবং মাতামুহুরি নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে বিভিন্ন ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চকরিয়া উপজেলার ইউএনও জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিদর্শনে গিয়ে চোয়ারফাঁড়ি ও ঢেমুশিয়া কোনাখালী এলাকায় বদ্ধখালের ওপর নির্মিত সøুইস গেটের জলকপাটগুলো খুলে দেন। বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলার কাকারা, বমু, সুরাজপুর-মানিকপুর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, ফাঁসিয়াখালি, বার বাঁকিয়া, মগনামা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এ দিকে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফেনীর ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী
ফেনী অফিস ও ফুলগাজী সংবাদদাতা জানান, ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের চাপে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ২৬ গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নতুন করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ঘর-াড়ি ডুবে অন্তহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বাসিন্দারা। গ্রামীণ সড়ক ও জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবার রাতে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দৌলতপুরে দু’টি, বরইয়া, নিলক্ষী ও একরামনগরে দু’টি এবং পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধর ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের বাঘমারা এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। বিকালে মির্জানগর ইউনিয়নে আরেকটি বাঁধ ভেঙে যায়। এতে ফুলগাজীর বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৮টি এবং পরশুরামের আটটি এলাকা প্লাবিত হয়। এ ছাড়া ফুলগাজী বাজারসহ গ্রামাঞ্চলের বাজারে দোকানপাটে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়। ফেনী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদীর দুইপাশে ১২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যেখানে বাঁধ ভেঙেছে সেখানে পানি কমলেই ভাঙন মেরামত করা হবে।
এ দিকে মঙ্গলবার দুপুরে দুই উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ শুরু হবে।
ছাগলনাইয়া-পরশুরাম (ফেনী) সংবাদদাতা জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে পরশুরামের শালধর গ্রামের পাশে, ফুলগাজী দৌলতপুরে এবং ফুলগাজী-পরশুরাম সীমান্তের কিসমত ঘনিয়ামোড়া এলাকায় বেড়িঁবাধ ভেঙে অন্তত দশটি গ্রাম আকস্মিক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। এতে ঘরবাড়ি, ফসলিজমি ও মাছের পুকুরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের পূর্ব ঘনিয়ামোড়া এলাকায় কহুয়া নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে মো: মামুন (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ছাগলনাইয়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৫টির অধিক গ্রাম পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
নোয়াখালীতে ভারী বর্ষণ
নোয়াখালী অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় টানা ভারী বর্ষণে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারী বর্ষণে জেলা শহর মাইজদী জজকোর্ট সড়ক, সার্কিট হাউজ, মহিলা কলেজ, রেকডরুম সড়ক, মাইজদী-হরিনারায়ণপুর সড়ক, মোক্তার মসজিদ সড়ক, নোয়াখালী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সড়কসহ নোয়াখালী পৌরসভার ৮০ অংশ ভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
মিরসরাইয়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মিরসরাইয়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে সহস্রাধিক পরিবার। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেঙে গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ সড়ক। এ ছাড়া নিমজ্জিত রয়েছে রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত। জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর, সরকারতালুক, খিলমুরারী ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
বিপদসীমার ওপরে আত্রাই নদীর পানি
বাসস : জেলার সদর উপজেলার আত্রাই নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এছাড়া জেলার পুনর্ভবা, ইছামতী, ঢেপা, কাকরা ও করতোয়া নদীর পানি পৌঁছে গেছে বিপদসীমার কাছাকাছি।
মঙ্গলবার দিনাজপুর শহর ও আশপাশে টানা বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলার সব নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার খানসামা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও চিরিরবন্দর, সদর উপজেলার অংশে বয়ে যাওয়া আত্রাই, সদর উপজেলার ওপর বয়ে যাওয়া পুনর্ভবা ও ফুলবাড়ি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীর পানি বিপদসীমার খুব কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর জামান নয়ন জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জেলার খানসামা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর এই অংশে বিপদসীমার ৪৩ দশমিক ৭০ মিটারের বিপরীতে প্রবাহিত হচ্ছে ৪৪ দশমিক ১৭ মিটার ওপর দিয়ে। আত্রাই নদীর পানি জেলার চিরিরবন্দরের ভূষিরবন্দর অংশে বিপদসীমার ৩৯ দশমিক ১৫ মিটারের বিপরীতে প্রবাহিত হচ্ছে ৩৭ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
এছাড়াও শহরের পাশ দিয়ে বহমান পুনর্ভবা নদীর পানি বর্তমানে ৩০ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পুনর্ভবা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৩৩ দশমিক ৫০০ মিটার দিয়ে।
মন্তব্য করুন