দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : প্রায় ১ মাস পর নবজাতক শিশু ফিরে এলো মমতাময়ী মা রত্নার কোলে। গুলিবিদ্ধ বাবা আব্দুর রশিদ আবেগাপ্লুত হয়ে নবজাতক শিশুকে বার বার আদর করছিল। ঘটনা বিবরণে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট আব্দুর রশিদ গর্ভবতী স্ত্রী রত্নার চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ সময় টিকেট কাটতে গিয়ে ছররা গুলিতে নাভির নিচে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় আব্দুর রশিদ। ৯ আগস্ট প্রচন্ড ব্যথায় ছটফট করলে গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে আহত আব্দুর রশিদের মা ১৭ হাজার টাকায় অপারেশনের ব্যবস্থা করে। তাতেও সে সুস্থ হয়নি।
এরপর ১১ আগস্ট স্ত্রী রত্না ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। এসময় উপায় না পেয়ে ৩দিনের নবজাতককে নি:সন্তান এক দম্পত্তির কাছে দিলে খুশি হয়ে তারা রত্নাকে স্বামীর চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
গত সোমবার দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষে নবজাতক শিশু সন্তানকে বাবা-মার কোলে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করে। রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা দিকে রাজবাটী এলাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহাগ চন্দ্র সাহা নবজাতককে তার মা রত্নার কাছে তুলে দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ জিন্নাহ আল মামুন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান, এসিল্যান্ড আব্দুর রহিম, কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ হোসেন, শহর সমাজসেবা অফিসার আসাদুজ্জামান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী একরামুল ইসলাম আবীর প্রমুখ।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছ থেকে নেয়া ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রী রত্নাকে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া যাবতীয় চিকিৎসার খরচ প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।