ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : খরিদ্দার দোকানে আসছেন, স্বাভাবিক নিয়মে চা-নাস্তা খেয়ে চলে যাচ্ছেন। বিক্রেতাও স্বাচ্ছন্দ্যে সব কিছু পরিবেশন করছেন। দেখে বোঝার উপায় নেই দোকানি ও তার ছেলে কানে শুনতে পান না আর মুখে কথা বলতেও পারেন না।
ক্রেতাদের ইশারা আর ঠোঁটের ভাষা বুঝে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেচা-কেনা করছেন তারা। তাদের এমন প্রতিভায় বিস্মিত সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও বিত্তবানরা পাশে থাকলে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের ফকদনপুর গ্রামের বাসিন্দা মো: হাবিব। জন্মগত বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী তিনি। পৌরশহরের রোড সুগারমিল গেটের বিপরীতে বাবার মুদি দোকান। ছোটবেলা থেকে থাকতেন মুদি দোকানে। বাবা মারা যাওয়ার পরে নিজে শুরু করেন দোকান।
বিয়ের পরে এক ছেলে ও মেয়ের বাবা হয়েছেন। মেয়ে কানে শুনতে পেলেও কথা বলতে পারেন না। আর ছেলেও কানে শুনতে পান না আর মুখে কথা বলতে পারেন না। সকালে বাড়ির কাজ শেষ করে ছেলেকে সাথে নিয়ে দোকানে আসেন তিনি। বাবা-ছেলের যোগসাজশে চলে বেচা-কেনা।
দোকানের প্রয়োজনীয় মালামাল কিনে নিয়ে আসেন ছেলে। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে আবার কথাও বলেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। দোকান থেকে কেউ বাকি নিলে সেটিও লিখে রাখেন বাবা-ছেলে। হাবিবের স্ত্রী আফরোজা আক্তার বলেন, ১১ বছর আগে হাবিবের সাথে বিয়ে হয় তার।
স্বামীর মতই দুই সন্তানও কথা বলতে পারেন না। ইশারা আর ঠোঁটের ভাষা বুঝে তাদের সাথে জীবনযাপন করছেন। স্বামী ও ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতা হলেও মেয়ের হয়নি এখনও। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সরকার ও বিত্তবানরা তাদের পাশে দাঁড়ালে বাচ্চাটার চিকিৎসা করতে পারতেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সারোয়ার মুর্শিদ আহমেদ বলেন, হাবিব এর পরিবারকে ক্ষুদ্র ঋণ সহয়তা দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া তার মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। পরিবারটির পাশে থাকবে সমাজসেবা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।