শিশুরা হাসপাতালে, শিক্ষক পলাতক
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : রংপুরের তারাগঞ্জে এক শিক্ষকের (হুজুর) বিরুদ্ধে মাদ্রাসার দুই শিশু শিক্ষার্থীকে জুসের সাথে বিষ খাইয়ে হত্যা করার জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে শিশু দুইটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ইমরান নামে এক শিশুটির বাবা মাদ্রাসার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের পঞ্চায়েত পাড়া এলাকায়। উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের পঞ্চায়েত পাড়া এলাকায় মদিনাতুল করমি লিল্লাহ বোডিং মাদ্রাসায় অনিয়মিত শিক্ষক হিসাবে একই ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দায়িত্বপালন করে আসছেন।
ওই মাদ্রাসায় পঞ্চায়েতপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে ইমরান হোসেন (১০) ও একই ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের খাজা মিয়ার ছেলে ইয়ামিন হোসেন (১১) আরবি শাখায় লেখাপড়া করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেনকে অপর শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনকে তার বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ডেকে আনতে বলেন।
শিক্ষকের কথামত ইয়ামিন হোসেন, ইমরান হোসেনকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে ওই শিক্ষক তাদেরকে কবরের ভিতরে জ্বিন দেখাবেন বলে মাদ্রাসা থেকে প্রায় ৮০০গজ দূরে একটি কবরস্থানে নিয়ে যায়। পরে কবরস্থানে একটি গর্তে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিয়ে তিনিও ওই গর্তে নামেন।
গর্তের মধ্যে থাকা গোলাপ জল, আগরবাতি, ছুরি দেখতে পায় ওই শিশুরা। খানিক পরেই ওই শিশু দুইটির চোখ কালো কাপড় দিয়ে দিয়ে বেধে দেয় এবং বলে চোখ খোলার চেষ্টা করলে জ্বিন তাদের বাবা মার ক্ষতি করবে। পরে শিক্ষক দুই শিশুকে জুস পান করতে দেন। জুসপান করার সময় ইমরান হোসেন বমি করেন। এতে ওই শিক্ষক দুই শিশুকে গালাগালি করেন।
ওই সময় কবরস্থানের পাশের জমি থেকে ছাগল আনতে যাওয়ার সময় কবরস্থানের পাশে কথাবার্তা শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান শিশু দুইটি কান্নাকাটি করছে। এমন সময় ওই শিক্ষক গর্ত থেকে উঠে তার বাইসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ইমরান হোসেন পরিবারের লোকজন কবরস্থানের গর্ত থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।
শিশু দুটির শরীর থেকে কীটনাশক (বিষ) এর গন্ধ পেলে শিশু দুইটিকে স্থানীয় তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক শিশুদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করেন। আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) ইমরানের মা ইয়াসমিন আরার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমানে আমার তারা ভাল আছে। আমি ওই হুজুরের বিচার চাই।
অভিযুক্ত শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তারাগঞ্জ থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাইনি তারপরেও ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সবকিছুই নজরে আছে আমার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।