ভিডিও

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে রাসায়নিক সার ছাড়াই ফসল উৎপাদন করেছেন কৃষক সোহরাব মন্ডল

প্রকাশিত: নভেম্বর ০১, ২০২৪, ১১:২৬ রাত
আপডেট: নভেম্বর ০১, ২০২৪, ১১:২৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : রাসায়নিক সার ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে ধান, পটলসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে সাড়া ফেলেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক মো. সোহরাব মন্ডল। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে একই পদ্ধতিতে চাষ করছেন গ্রামের অন্যান্য কৃষকরাও।

সরেজমিনে উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের নথন জামাদানী গ্রামে গিয়ে দেখা যায় সোহরাব মন্ডল জমি থেকে পটল সংগ্রহ করছেন। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪ মণ পটল বিক্রি করেন তিনি। পটল চাষ করে আশানুরুপ ফলন এবং বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি।

একইভাবে সোহরাব মন্ডলসহ গ্রামের অন্যান্য কৃষকরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই তাদের আমন ধানসহ পটল, কলা ও শীতকালীন শাক সবজি আবাদ করছেন। আবাদকৃত আমন ধান রোপণের ১০০ দিনের মাথায় ধান গাছ শিষে ছেয়ে গেছে। এই চাষ প্রক্রিয়ায় খরচ কম হওয়ায় অন্য কৃষকেরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।

এসপিএনএফ (সুবাস পালাকার ন্যাচারাল ফার্মিং) পদ্ধতি অনুসরণ করে জামাদানী গ্রামের সোহরাব মন্ডল তার ২০ শতাংশ জমিতে পটল চাষ শুরু করেন। ফলন ভাল ও খরচ কম হওয়ায় একই পদ্ধতিতে গ্রামের সেলিনা, বেলাল, এনামুল, মমতাজ, নুরুজ্জামান ও মান্নান চাষ করেছেন পটল, কলা এবং শীতকালীন শাক সবজি। কোনো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই গোবর ও গোমূত্র দিয়ে বিশেষভাবে এসব চাষ করেছেন তারা।

কৃষক সোহরাব মন্ডল জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশের (সিসিডিবি) দিক নির্দেশনা ও সহযোগিতায় ৫ মাস পূর্বে পটল চাষ করে আশানুরুপ ফলন পেয়ে আমন ধান ও কলা চাষ করেছেন তিনি। ইতোপূর্বে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে ওই জমিতে পটল চাষে তার খরচ হতো প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

বর্তমানে এ পদ্ধতিতে পটল চাষে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, একইভাবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে এক বিঘা জমিতে আমন চাষে খরচ হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা, আর এসপিএনএফ পদ্ধতিতে আমন চাষে খরচ হবে মাত্র দেড় হাজার টাকা। এতে খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় আগামীতে সব জমিই এই পদ্ধিতে চাষাবাদ করবেন বলে জানান তিনি।

কৃষকরা জানান, এসপিএনএফ পদ্ধতিতে প্রথমে জীবামৃত ‘জীবামুরাদ’ তৈরি করতে হয়। এতে ১০ কেজি গোবর, ১০ লিটার গো মূত্র, ১ কেজি চিটাগুড়, ১ কেজি বেসন ও পরিমাণ মতো মাটি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হয়। যা তিন দিন রাখার পর জমিতে প্রয়োগ করে চাষাবাদ করতে হয়।

সিসিডিবির দাউদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক হরি সাধন রায় বলেন, এই অঞ্চলে প্রথমবার সোহারাব মন্ডলসহ কয়েকজন কৃষক আমন ধান, পটল, কলা, আলু, সরিষা এসপিএনএফ (সুবাস পালাকার ন্যাচারাল ফার্মিং) পদ্ধতিতে চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, প্রাকৃতিক উপায়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ অবশ্যই ভাল। এতে কৃষকের খরচ বাঁচে এবং ফলনকৃত ফসল পুষ্টি সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। উপজেলার নথন জামাদানী গ্রামের কৃষকরা এসপিএনএফ পদ্ধতিতে চাষ করছে বিষয়টি তিনি শুনেছেন তবে সরেজমিনে দেখা হয়নি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS