রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী নগরীর অন্তত অর্ধশতস্থানে প্রতিরাতেই বসছে রমরমা জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসরে নিম্ন আয়ের মানুষ ছাড়াও বড় ব্যবসায়ী, ঠিকাদার এমনকি সরকারি চাকরিজীবীরাও বসেন নিয়মিত। সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা-পুলিশকে ম্যানেজ করেই এসব জুয়ার আসরগুলো পরিচালনা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরে সবচেয়ে বেশি জুয়া চলে রাজপাড়া থানা এলাকায়। এছাড়াও কাশিয়াডাঙ্গা, বোয়ালিয়া, মতিহার, চন্দ্রিমা ও পবা থানা এলাকায় জুয়ার আসর বসে। মাঝেমধ্যেই এসব এলাকায় অভিযান চালিয়ে টাকা, তাসসহ জুয়াড়িদের গ্রেফতার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।
সম্প্রতি ডিবি পুলিশ কয়েকটি জুয়ার আসরে হানা দিয়ে বেশ কিছু জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেছে। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় নগরীর বসড়ি গোরস্তানপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাস ও টাকাসহ সাত জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে কাশিয়াডাঙ্গা থানার পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার হাউজি খেলায় প্রতিরাতে প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হতো। হাউজি খেলতেন শহরের ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার শ্রেণির লোকেরা। এখন হাউজি বন্ধ হওয়ায় জুয়াড়িরা বিভিন্ন এলাকায় জুয়ার আসরে টাকা ওড়াচ্ছেন। প্রতিরাতে বিপুল পরিমাণে টাকার লেনদেন হচ্ছে। জুয়ার আসর থেকে মাসোহারা তুলতে গিয়ে কোনো কোনো পুলিশ সদস্যও জুয়া খেলতে বসে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, প্রতিরাতে নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় জুয়ার আসরের টাকার একটা অংশ শ্রমিকনেতাদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হয়। ২০২০ সালে এখান থেকে র্যাব অভিযান চালিয়ে ২৬ জনকে গ্রেফতার করেছিল। এরপর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পরে আবার শুরু হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমপির মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, জুয়ার আইন খুব শক্ত না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্রেফতারের পর জরিমানা দিয়েই জুয়াড়িরা মুক্তি পেয়ে যান। তাই তারা আবার জুয়ার আসরে বসেন। খবর দেওয়া কিংবা জুয়ার আসর থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কোনো পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।