গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে ছোট বড় প্রায় সব নদ-নদী ও খাল বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। করতোয়া, কাটাখালী ও বাঙ্গালী নদীর বিভিন্ন ধরনের ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনে-রাতে নির্বিচারে চলছে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহাৎসব।
বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও বিদ্যুতের ৩৩ হাজার কেভির টাওয়ার। চরম ক্ষতির মুখে এলাকার কৃষি-জমি, কৃষক, জীববৈচিত্র্য প্রকৃতি ও পরিবেশ। নদ-নদী অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও প্রশাসনের তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসী ও পরিবেশ প্রেমীদের।
উপজেলার মধ্যে প্রায় ১৭ কিলোমিটারজুড়ে বয়ে গেছে করতোয়া, কাটাখালী ও বাঙ্গালী নদী। এছাড়াও রয়েছে ছোট ছোট নদী। কিন্তু উপজেলায় বালুমহাল না থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। দিন দিন যেন বালু দস্যুদের দৌরাত্ব বেড়েই চলেছে। প্রায় অর্ধশত স্থানে ছোট বড় ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনরাত সমান তালে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
খাল ও নদ-নদী থেকে বালু তুলে বড় বড় স্তপ করে বিক্রি করায় চরম ক্ষতির মুখে কৃষি জমি এলাকার জীববৈচিত্র্য, প্রকৃতি ও পরিবেশ। উপজেলার চক রহিমাপুর, কামারপাড়া, তরফমনু, হাওয়াখানা, কুঠিবাড়ী, পলুপাড়া, সাহেবগঞ্জ, ফকিরগঞ্জ, বড়দহ, ফুলবাড়ীসহ ৫০টি স্থান যেন বালি উত্তোলনের লীলাভূমি।
এদিকে দিনরাত এই বালি পরিবহণের কারণে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে ধুলাবালি ঢুকে বাড়ির আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে বাসিন্দারা সর্দি-কাশিসহ নানা ধরণের অসুখে। প্রায় ৫/৬ মাস বন্ধ থাকার পর হঠাৎ করে আবার পরিবেশ ধ্বংস করে বালি উত্তোলন করায় প্রশাসনের ভ’মিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই বালু উত্তোলনে ফলে বিশাল এলাকার ফসলি ক্ষেত, বাড়িঘর ভেঙে ও বিদ্যুতের টাওয়ার, ব্রি, রাস্তাঘাট এবং বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বিশাল এলাকা বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মোবাইল কোর্টসহ নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। তারপরও উপজেলা প্রসাশন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।