জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : জয়পুরহাটে বেসরকারি গ্র্যাজুয়েট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু। এমন অভিযোগে রোগীর স্বজনদের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে গতকাল শুক্রবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাসপাতালের সিইও ডা. রুহুল আমিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সদরের চকবরকত ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৭৫) নিজ বাড়িতে পড়ে গেলে তার পা ভেঙে যায়। ৩ মার্চ তাকে জয়পুরহাট শহরের গ্রাজুয়েট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্মরত চিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলাম নাহিদ ও ডা. দেওয়ান মো. আমিনুল ইসলাম মরিয়ম বেগমকে বয়ঃবৃদ্ধ হওয়ায় অপারেশন না করানোর পরামর্শ দেন। রোগীর পরিবার তাকে অপারেশন করার চাপ দেয় এবং অপারেশন করানোর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে তদবির করান। পরবর্তীতে দু’জন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে অপারেশন করা হয়।
রোগীর অপারেশনের পর দু’দিন পর ৫ মার্চ রাতে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া অথবা বাইরের কোন উন্নত হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়। ওইদিন রাত ২টার দিকে রোগীকে বাইরে নেওয়ার পরামর্শসহ ছাড়পত্র দিলেও পরিবার রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিতে অস্বীকার করে।
পরবর্তীতে ভোর পৌণে ৫টায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রে রোগীর ছেলে জাকির হাসান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলায় মৃত্যুর যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য তিনি এমন কাজ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এনেস্থেসিয়ান ডা. দেওয়ান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, রোগীর অবস্থা বুঝে পায়ের অপারেশনের জন্য শুধু পায়েই এনেস্থেসিয়া দেওয়া হয়, পুরো শরীরে নয়। রোগীর স্বজন যে দাবি করেছে রোগী পুরোপুরি অজ্ঞান ছিল, তা সঠিক নয়।
তার জ্ঞান ছিল, তিনি সবকিছু বলতে পারছিলেন। অন্যত্র যাবার পরে রোগী মারা গেলে এ হাসপাতালের কোন দায় নেই। এক্ষেত্রে কোন এক অশুভ শক্তির ইচ্ছায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন রোগীর ছেলে, অভিযোগ করেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এসময় গ্র্যাজুয়েট হাসপাতালের ম্যানেজার মুকুল হোসেনসহ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।