বাগজানা (পাঁচবিবি) প্রতিনিধি : লতিরাজ কচু জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ চাষের পরিধি বাড়ছে।
পাঁচবিবির কচুর লতি কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও হচ্ছে। ফলে এ অর্থকারী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তবে এবছর অনাবৃষ্টির জন্য এ সবজি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষক।
জানা যায়, বাগজানা ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ, রামভদ্রপুর, রামচন্দ্রপুর, ধরঞ্জী ইউনিয়নের সালুয়া, রাতনপুর, কোতয়ালীবাগ, নন্দইলসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই খরচ স্বল্প ও অধিক লাভ হওয়ায় ব্যাপক পরিমানে কচুর লতি চাষ হচ্ছে।
প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ হাজার টাকার। প্রতি বিঘা জমিতে সপ্তাহে ৩-৪ মণ কচুর লতি পেয়ে থাকে কৃষকরা। বৃষ্টি হলে সপ্তাহে দুই দিন লতি কাটতে হয়। এখন বৃষ্টি কম হওয়ায় সপ্তাহে একদিন করে কাটতে হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি লতি ৪০-৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রী হচ্ছে।
দরগাপাড়া এলাকার বাড়িক চৌধুরী বলেন,এক বিঘা জমিতে লতি চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আশানরুপ ফলন পাওয়া যাবে। তবে অনাবৃষ্টির কারনে এবার লতির আবাদ কিছুটা কম হয়েছে।এছাড়াও উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের রতনপুর হিন্দুপাড়ার আসান বর্মন বলেন আমি দুই বিঘায় লতি চাষ করেছি। জমিতে জল না থাকায় ধীর গতিতে লতি বের হচ্ছে ও চিকন হয়ে বের হচ্ছে।
বাগজানা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র বলেন, লতির পাশাপাশি কান্ডও উৎপাদন করে এ এলাকার কৃষকের ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছে। এবার ১৫ কাঠা জমিতে কচুর লতি আবাদ করেছি। অনাবৃষ্টির কারনে সপ্তাহে একদিন করে লতি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বৃষ্টি থাকলে সপ্তাহে দুইদিন করে কাটতে হতো। পাইকাররা বাড়ি থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে লতি নিয়ে যায় উপজেলার সবচেয়ে বড় কচুর লতির হাট বালিঘাটা ইউনিয়নের বটতলী লতিহাটিতে। সেখান থেকে ট্রাক যোগে ঢাকার কাওরান বাজারসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় চলে যাচ্ছে পাঁচবিবিতে উৎপাদিত কচুর লতি।
বটতলী লতিহাটির আরতদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার বৃষ্টির পরিমান কম হওয়ায়, লতির উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে। কচুর লতির পূর্ণ মৌসুমে প্রতিদিন ৩-৪ ট্রাক করে তারা লতি পাঠাতো, তবে উৎপাদ কম হওয়ায় ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ২ ট্রাক করে লতি প্রতিদিন ঢাকায় পাঠাচ্ছেন।
লতির পাইকার মুমিন ও রনি জানান, পাঁচবিবির বটতলী লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান তারা।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, এই মৌসুমে ৫৫০ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, ইরি ধান ঘরে তোলার পরে নতুন কিছু জমিতে কচুর লতি চাষ করা হবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।