আবুল কালাম আজাদ, বেড়া, (পাবনা) : তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দেশ। গরমে একটু শীতলতা খুঁজে বেড়াচ্ছেন মানুষ। পাবনার বেড়া উপজেলায় তীব্র গরমে ক্লান্ত হয়ে ওঠা শ্রমজীবীরা প্রাণ জুড়াতে হাতে তুলে নিচ্ছেন রাস্তার পাশে থাকা খোলা শরবত।
এ শরবতে সাময়িক তৃষ্ণা মেটালেও এই শরবতে মেশানো হচ্ছে ঘনচিনি যা পান করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন এলাকার মানুষ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেড়া পৌর এলাকার করমজা চতুর হাটে বেশ কিছু খোলা শরবতের দোকান। এসব দোকান তৃষ্ণা মেটাতে ভিড় করছে তৃষ্ণার্ত মানুষ। এসব শরবতে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘনচিনি যা মানবদেহে ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
শরবত বিক্রেতারা বলেন, দাবদাহ যতোই বাড়ছে, আমাদের বিক্রি ততোই বেড়ে যাচ্ছে। রাস্তার পাশে খোলাভাবে এসব শরবত বিক্রি করা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত জিজ্ঞেস করলে শরবত বিক্রেতা মো. আজমল হোসেন বলেন, আমরা শরবতে ব্যবহৃত পানি ফিল্টার করে ও বরফ ব্যবহার করে শরবত বিক্রি করে থাকি।
আর বেল, লেবু বা অন্য যে কোন ফল আমরা পরিস্কার করে ধুয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। যদিও শরবত বিক্রেতারা পরিস্কার পানি ব্যবহার কথা বললে প্রকৃতপক্ষে তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। এমন কি শরবতে ঠান্ডার যে আইস দেওয়া হচ্ছে সেটাও পরিস্কার পানি দিয়ে তৈরি নয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ঘনচিনি ব্যাপারে শরবত বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ঘনচিনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সেটা আমার জানা নেই।
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মাহমুদুল করিম রাজু বলেন, রাস্তার পাশে খোলা শরবত সত্যিই স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এসব শরবত পান করলে পানিবাহিত অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে মানুষ।
বিশেষ করে শিশুদের জন্য খোলা শরবত পান করা খুবই মারাত্মক। তাই স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এধরনের শরবত পান করা থেকে মানুষকে বিরত থাকতে হবে। তবে তৃষ্ণা পেলে কিছুক্ষণ পর পর নিরাপদ পানি পান করা উচিত। তবে এ ধরণের শরবত পানে ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস, হেপাটাইটিসের মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে সাধারণ মানুষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমা তুয জান্নাত বলেন, খোলা শরবতে অবশ্যই স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ ধরনের শরবত মানুষের সাময়িক তৃষ্ণা মেটালেও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এ ধরনের রাস্তায় বা ফেরি করে বেচা শরবত কোন মতেই পান করা উচিত নয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।