দিনাজপুরের বিরলে নির্বাচনি সহিংসতা
দিনাজপুর ও বিরল প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১ নং আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনার সময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটায় বিরল উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ সহিংস ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামেরর মাবুদ বক্সের ছেলে মোহাম্মদ আলী কাচুয়া (৬৫)। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী টিউবওয়েল প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী জোবায়দুর রহমানের চাচা। এঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ভোট গনণা শেষ হয়। এসময় দুই মেম্বার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জোবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে ফলাফল নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। পুলিশ এ সময় প্রথমে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। উত্তেজিত জনতা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েন। এসময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোহাম্মদ আলী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জিল্লুর রহমান বলেন, নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনার পর দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।
এ বিষয়ে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের ফলাফলে সন্তুষ্টও হয়েছেন। কিন্তু দুই মেম্বার প্রার্থী ফলাফল মেনে না নেওয়ায় দুইজনের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে উত্তেজিত সমর্থকরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এসময় কর্মকর্তা ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ফিরে আসায় সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রেও হামলা চালায়। পুলিশ এসময় আত্মরার্থে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় ওই বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে হাসপাতালে আনলে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।