ভিডিও

বগুড়া শজিমেক ছাত্রাবাসে হামলা ৬টি কক্ষ ভাঙচুর

আহত ৫

প্রকাশিত: মে ০২, ২০২৪, ১০:৪৩ রাত
আপডেট: মে ০৩, ২০২৪, ১২:৪৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ছাত্রাবাসের  অন্তত: ৬টি কক্ষ ভাঙ্চুর করা হয়। পড়ার টেবিল দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ হামলায় কমপক্ষে ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।

অভিযোগে জানা যায়, পড়ার টেবিল দখল করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কলেজ ছাত্রাবাসের অন্তত ছয়টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। কক্ষগুলোতে মেডিকেলের কংকাল, হাড়, ল্যাপটপ, ফ্রিজসহ অন্যন্য দামী আসবাবপত্র ছিল। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।

এসময় একাধিক শিক্ষার্থী জানান, মূলত নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে টানাসহ ক্যাম্পাসে অরাজকতা তৈরি করার চেষ্টা করছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাংশ। একই সাথে, রাজনীতির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে চায় তারা। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের এসব কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকতে চাই।

তবে বগুড়া শজিমেক ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অর্ঘ্য রায় সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোন ধরণের হামলা চালায়নি। বরং তারাই আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।  মিথ্যা ও বানোয়াট একটা ঘটনা তৈরি করে ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে এক পক্ষ। বগুড়া শজিমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২ মে) একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিকেল কলেজ প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী (৩০তম ব্যাচ) রিদওয়ান হক, একই ব্যাচের তালহা, নাদিম ও আরিফ মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শৈশব রায়ের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সীমান্ত, আলী হাসান, ইসমাম ও অপর্ণ নিলয়কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায় এতে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অধ্যক্ষের নির্দেশে তিনজন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সহ-সভাপতি অর্ঘ্য রায় বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। হোস্টেলে একটি পড়ার টেবিল নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুই পক্ষ হয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়েছেন। কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের অনুসারীরা ক্যাম্পাসে আগের মতো সংঘাত সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। এ হামলার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। কলেজ প্রশাসনের তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।

শজিমেক ছাত্রলীগ শাখার নেতা-কর্মীরা জানান, কলেজে আধিপত্য নিয়ে ছাত্রলীগের ২টি পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সার্বিক বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. রেজাউল আলম জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সরকারকে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, শজিমেকের ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। শুনেছি কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন। তবে আমরা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS