মহাসড়কে ডিউটিতে ব্যস্ত ট্রাফিক পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের আগে আবারও যানজটে স্থবির বগুড়া শহর। যানজটে পড়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা মানুষের। শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, চকযাদু ও গোহাইল সড়ক, ফতেহ আলী মোড়সহ প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটে পড়ে নাকাল হচ্ছে মানুষ।
নষ্ট হচ্ছে কর্মঘন্টা। ১৫ মিনিটের পথ পৌছেতে সময় লাগছে আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা। শহরের ভিতরে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা তেমন নেই। ঈদের আগে শহরতলীতে মহাসড়কে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত ট্রাফিক পুলিশ। যে কারণে প্রভাব পড়ছে শহরের অভ্যন্তরে। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, লোকবল কম হওযায় শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শুধু যানজটই নয়, সমানতালে শহরে বেড়েছে ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল। ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল মুক্ত না হওয়ায় পথচারীদের ফুটপাত দিয়ে চলা দায় হয়ে পড়েছে। ক’দিন আগে সদর থানার পুলিশ ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু করে। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে ১৩ জন হকারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এখন অভিযানে ভাটা পড়েছে।
এ সুযোগে হকাররা ফের ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করছে। যে কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, সুত্রাপুরে গোহাইল সড়কে জেলা পরিষদে মার্কেটের সামনে, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, এক নম্বর রেল ঘুমটি, বাদুড়তলা ক্রসলেন, চাঁদনী বাজার, ফতেহ আলী মোড়, ইয়াকুবিয়া স্কুলমোড়, জলেশ্বরীতলা, কালিবাড়ি সেউজগাড়ী আমতলা, স্টেশন রোড়ে হকার্স মার্কেটের সামনে, নবাববাড়ি সড়কে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, ইয়াকুবিয়া স্কুলের মোড় হতে গোহাইল সড়ক পর্যন্ত আজ বুধবার (১২ জুন) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ যানজট।
যানজটে পড়ে সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সময় সেখানে যানজট নিয়ন্ত্রণে কোন ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যায়নি। যানজটের একই অবস্থা শহরের কামারগাড়ি রেল ঘুমটি, চকযাদু সড়ক, বাদুড়তলা, ১,২ ও ৩ নম্বর রেল গেইট, বড়গোলা, টিনপট্টি, দত্তবাড়ি, কালিতলা, দত্তবাড়ি থেকে নামাজগড় মুখি সড়ক, মেরিনা সড়ক এলাকায়। এ সব এলাকাতেও যানজটে পড়ে মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি রিকশা চলাচল করে। যার মধ্যে ৪৫ হাজারের মতো রিকশা ব্যাটারি চালিত। শুধু রিকশা ও থ্রি হুইলার বা ইজিবাইকই নয়, শহরে চলাচল করে আরও ১৫ হাজারেরও বেশি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা।
যার বেশিরভাগেরই রেজিস্ট্রেশন নম্বর নাই। এগুলোও অবৈধ। এ ছাড়া প্রতিদিনই সড়কে নতুন নতুন অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি চালিত অটোরিকশা নামানো হচ্ছে। বেকারত্ব ঘোচাতে সংসার চালাতে অনেকে এ সব নতুন গাড়ি কিনে রাস্তায় নামাচ্ছে। যে কারণে দিন দিন শহরে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। ফলে যানজটও বেড়ে যাচ্ছে।
সড়কগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে ইজিবাইক, সিএনজি চালক অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাসহ সব ধরণের যানবাহন। ফলে যানজটে আটকা পড়ছে মানুষ। এ সব সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ উদাসীন বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর ট্রাফিক বিভাগের ইনচার্জ (টিআই) মো: মাহবুবুল ইসলাম খান বলেন, কোরবানির ঈদের আগে মহাসড়কে পশুবাহি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের প্রচন্ড চাপ বেড়েছে। এতে মহাসড়কে যানজট লেগে থাকে। তাই যানজট নিয়ন্ত্রণে মহাসড়ককে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রাফিক বিভাগের লোকবলের একটি অংশ শহরতলির বনানী-লিচুতলা, মাটিডালি এলাকায় মহাসড়কে নিয়োজিত আছে। তিনি দাবি করেন,লোকবল কম হলেও শহরের অভ্যন্তরে যানজট নিয়ন্ত্রণে সাধ্যমত কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। তিনি বলেন, ঈদের আগে শহরে ভিড় বাড়ার কারণেও যানজট বেড়েছে। তবে এ অবস্থা যাতে না থাকে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।