গড় দামে গরুর চামড়া বিক্রি, খাসির চামড়ায় আগ্রহ নেই
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় চামড়া বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পাননি কোরবানীদাতারা। প্রায় পানির দরে বিক্রি করেছেন কোরবানীর পশুর চামড়া।
ঈদের দিন বগুড়া শহরের থানা মোড় থেকে শুরু করে চকসুত্রাপুর চামড়াপট্টি পর্যন্ত চামড়া কেনার যে অস্থায়ী দোকান বসে তারা গরুর চামড়া গড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায় চামড়া কিনেছেন। ছাগলের চামড়া কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ ছিলোনা। ২০-৩০ টাকাতেও বিক্রি হয়নি ছাগলের চামড়া।
ফলে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরাও লাভ করতে পারেনি। সব মিলিয়ে চামড়া নিয়ে টানা কয়েক বছর যে দর পতনের খেলা শুরু হয়ে এবারও সেই খেল এবারও চললো। এবারও চামড়ার সিন্ডিকেট ভাঙা গেল না। পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে বগুড়াসহ এই অঞ্চলে ব্যাপক চামড়া কেনা বেচা হয়। বিশেষ করে বগুড়ায় ঈদ এবং ঈদের পরে কয়েক দিন ধরে চলে চামড়াকেনা বেচা।
সব মিলিয়ে বগুড়ায় চামড়া কেনা হয় লাখের বেশি। শহরের চামড়া কেনার পর উপজেলা এবং আশে পাশের উপজেলা থেকেও কিছু চামড়া বগুড়ায় আসে। উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা শহরের চেয়ে কম দামে চামড়া কিনে লবন দিয়ে কয়েক দিন পর বগুড়ায় এনে বিক্রি করেন। এত তারা কিছুটা দাম বেশি পান।
ঈদের দিন সকাল ১১ টার দিকে শহরের এক নাম্বার রেল ঘুমটি এলাকায় এসে দেখা গেছে, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা রিকশায় করে তিন থেকে চারটি করে চামড়া আনতে শুরু করেছেন। প্রথম দিকে দুই একটা দোকানি দাম বেশি বললেও পরের দোকানিরা এমন দাম বলেন যে তা খুবই কম। আবার আগের দোকানে ফিরে গেলে তারা আর নিতে চাচ্ছেনা। এ অবস্থায় অনেকে চামড়া ফিরে ফিরে যাচ্ছে।
শহরের সুত্রাপুর ও ইসাহাক আলী লেন এলাকার রাজিব ও রুবেল এবার স্থানীয়ভাবে চামড়া কিনেছিলেন ৩১ টি। এই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এক লাখ টাকার কম দামের গরুর চামড়া ৪ থেকে ৫শ’ টাকা এবং বড় চামড়া কিনেছেন ৬শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা দরে। কিন্তু যখন তারা বিক্রি করতে যান তখন দাম বলা হয় গড়ে ৫শ টাকা। রাজিব জানান, গড়ে ৫ শ’ টাকা শুনে তিনি ভরকে গিয়ে ছিলেন।
রেল ঘুমটি থেকে চকসুত্রাপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছেন। কেউ দাম বেশি বলেনি। পরে তার পরিচিত এক জনের মাধ্যম কসাইয়ের কাছে গড়ে ৭শ’ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তাদের সামান্য লাভ হয়েছে। বগুড়ার প্রতিষ্ঠিত এক চামড়া ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি নিয়মিত আর চামড়া কেনেন না। চামড়া ব্যবসা থেকে প্রায় সরে এসেছেন কিন্তু ঈদ উপলক্ষে কিছু চামড়া কিনে বগুড়ার ব্যবসায়ীদের কাছেই বিক্রি করেছেন।
এতে তার কিছু লাভ হয়েছে। বগুড়ার বড় বড় যে ব্যবসায়ীরা আছেন তারা গড়ে ৭শ’ থেকে ৭শ’ ৫০ টাকা দরে চামড়া পাইকারি কিনেছেন। একারণে ছোট এবং অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা ৫শ টাকা দরে চামড়া কিনেছেন যাতে তারা কিছু লাভ করতে পারেন। সবাই একই দামে কিনছেন এটা সিন্ডিকেট কিনা এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট কি না জানি না। সারা দিন ব্যবসা করে কোটি টাকা লগ্নি করে কিছু লাভ করতে না পারলে তো হবে না।
বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার জানান, বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা এখরও বগুড়ায় চামড়া নিয়ে আসেনি। আরও ৬ থেকে ৭ দিন পর বলা যাবে বগুড়ায় কি পরিমাণ পশু কোরবানি হয়েছে এবং চামড়া কেনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।