সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, রংপুর : আগামী বছর গ্যাস সংযোগ পেতে যাচ্ছে রংপুর ও নীলফামারী জেলার উদ্যোক্তারা। গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনের কাজ শেষ হবার পর এখন ডিস্ট্রিক রেগুলেটিং স্টেশন ও সরবরাহ পাইপলাইনের কাজ বেশ জোরেসোরে করছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিএল)। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, গ্যাস সরবারাহ শুরু হলে রংপুর অঞ্চলে শিল্প বিপ্লব ঘটবে। একই সাথে বাণিজ্যের বড় হার হিসেবে গড়ে উঠবে রংপুর অঞ্চল।
গত বছরের ১৪ নভেম্বর বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন প্রকল্পের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার টিবিএস স্টেশনে শিখা প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে পাইপে আগুন দেয়ার মধ্যদিয়ে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের জ্বালানি গ্যাসের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।
২০২৫ সালের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে বেশ জোরেসোরেই কাজ করছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। ৮, ১২ ও ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ১০০ কিলোমিটার হাইপ্রেসার ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন কাজের এখন চলছে ওয়েল্ডিং, র্যাপিং ও লেয়িং এর কাজ। এই পাইপলাইন দিয়ে ১৪০ পিএসআইজি প্রেসারে গ্যাস প্রবাহ হবে। ডিস্ট্রিক রেগুলেটিং স্টেশনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হবে বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায়।
পিজিসিএল বলছে ডিস্ট্রিবিউশন পাইপ লাইনের কাজ শেষ হবার পর করা হবে কমিশনিং এর কাজ। এরপর গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে গ্রাহক পর্যায়ে। প্রাথমিক পর্যায়ে ইপিজেড, বিসিক এর পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা এবং ক্যাপটিভ গ্যাস সংযোগ পাবে। তবে সিএনজি পাম্প ও আবাসিক সংযোগ পাবে না।
পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের পাইপ লাইন নির্মাণ সহকারী সাদ্দাম হোসেন জানান, মোট ৩টি ডিআরএস (ডিস্ট্রিক রেগুলেটিং স্টেশন) থাকবে। এরমধ্যে সৈয়দপুর ডিআরএস-৪৫ কিলোমিটার, রংপুর ডিআরএস ৪৫ কিলোমিটার ও পীরগঞ্জ ডিআর এস-১০ কিলোমিটার। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যখন কাজ শেষ হয়ে যাবে তখন সংযোগ দেওয়া হবে গ্রাহক পর্যায়ে।
রংপুর বিভাগে উত্তরা ইপিজেড, চিনিকল ও কিছু চালকল ছাড়া এই বিভাগে তেমন কোন ভারী শিল্প-কলকারখানা নেই বললেই চলে। যার অন্যতম কারণ গ্যাস সরবরাহ না থাকা। উদ্যোক্তারা জানান, রংপুরে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। নির্মাণ করা হবে ভারি শিল্প কলকারখানা। সেই সাথে বাড়বে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাণিজ্যের বড় হার। হবে রংপুর অঞ্চল।
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, গ্যাসের সুবিধা পেলে এই অঞ্চলে কৃষির বিপ্লব হবে শিল্পের বিপ্লব হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রংপুর অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা।
পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ বিতরণ পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। আর প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৬০ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুনে কাজ শেষ হবার গ্যাস সংযোগ নিতে পারবেন স্থানীয় শিল্প কলকারখানার মলিকেরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।