নাটোর প্রতিনিধি: প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, দ্রুততার সাথে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা থেকে এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছি আমরা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল দশটায় নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন শেষে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন বিচারপ্রার্থী যখন আদালতে আসেন তখন সবার প্রথমে একজন আইনজীবীর সাহায্য ঁেখঁজেন। বিচারপ্রার্থীগণ আইনের জটিলতা বোঝেন না, সেটা বোঝা তাদের পক্ষে সম্ভবও নয়। তারপরও তারা পরম নির্ভরতায় আইজীবীর ওপর সম্পদ ও স্বাধীনতা রক্ষার গুরুভার অর্পণ করেন। আইন পেশার শত বছরের সুনাম ও ঐতিহ্যই তাদের এই নির্ভরতার কারণ। এই নির্ভরতার সম্পর্ক আপনাদের জন্য একটি আমানত। এই আমানত রক্ষা করার দায়িত্বও প্রত্যেক আইনজীবীর। আমি বিশ্বাস করি, পেশাগত দায়িত্ব সুচারভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে আইনজীবীগণ এই আমানত সর্বদাই রক্ষা করে চলবেন।
তিনি বলেন, আইন পেশা যে কোনও সমৃদ্ধ গণতন্ত্রের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যার ওপর গড়ে ওঠে আধুনিক সমাজের সুবিন্যস্ত কাঠামো। আর এই সমাজের মানুষের জন্য সমতা ও ন্যায় বিচারের প্রত্যাশ্যাস্থল হিসেবে নিয়োজিত থাকেন আইনজীবীগণ। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে, একজন আইনজীবীর সততা কেবল তার মক্কেল এর প্রতি নয়, তার সততা ন্যায়বিচারের প্রতি। তাই ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণকর সমাজ বিনির্মাণের মধ্যদিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনজীবীগণকে আরও নিষ্ঠাবান ও কর্তব্যপরায়ণ হতে হবে। প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, বার ও বেঞ্চের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্কের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ খুবই জরুরি। বার ছাড়া যেমন আদালত চলে না, আবার আদালত ছাড়া বারেরও মূল্য নেই। বার যদি আদালতকে শ্রদ্ধা না করে বা আদালত যদি বারকে মূল্যায়ন না করে-তাহলে দুই পক্ষই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্তহবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, জনগণকে সাংবিধানিকভাবে দেশের মালিকানা প্রদান করা হয়েছে। আইনজীবী এবং বিচারকগণ তাদের উপলব্ধির জায়গা থেকে বাস্তব জীবনে সাংবিধানিক এই ধারাকে সমুন্নত রাখবেন বলে আশা করি।
নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক মুক্তার সঞ্চলনায় এবং সমিতির সভাপতি এডভোকেট আবু আহসান টগরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অম্লান কুসুম জিষ্ণু।
গণপূর্ত বিভাগ ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘ন্যায়কুঞ্জ’টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। ৭২ জন বসার এই বিশ্রামাগারে নারী ও পুরুষের পৃথক টয়লেট ছাড়াও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার রয়েছে। ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ছাড়াও নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অম্লান কুসুম জিষ্ণু, জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঁঞা, পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন আদালতের বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।