বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছীতে বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর কোলা বাজার আলহেরা টেলিকম নগদ একাউন্ট এজেন্সি বাতিল করেছে বলে জানিয়েছে নগদ একাউন্ট কর্তৃপক্ষ। এর সত্যতা নিশ্চিত করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলা গ্রামের ফুল মোহাম্মদ সরকারি সুবিধাভোগীর আওতায় বয়স্ক ভাতা পান। ভাতা তোলার জন্য মোবাইলে নগদ এ্যাকাউন্ট খোলেন কোলা বাজারে আলহেরা টেলিকম নামক নগদ এজেন্টের দোকানে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানায়, ৩ মাস পর পর বয়স্ক ভাতার টাকা মোবাইল একাউন্টে টাকা প্রদান করা হয়। গত অর্থবছরের তৃতীয় কিস্তি অর্থ্যাৎ জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ পর্যন্ত টাকা বিলম্বে জমা হয় আকাউন্টে। এর মাঝে প্রদান করা হয় ৪র্থ কিস্তি জুন মাস পর্যন্ত ভাতার টাকা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নগদ একাউন্ট আলহেরা দোকানের মালিক জুয়েল আরমানের ভাই সুমন হোসেন এক কিস্তির ১৮শ’ টাকা ভাতাভোগী ফুল মোহাম্মদকে দিয়ে আর এক কিস্তির টাকা সুমন হোসেন উত্তোলন করে আত্মসাত করে। ফুল মোহাম্মদ অন্যান্য ভাতাভোগীর কাছে জানতে পায় তারা ২ কিস্তি মোট ৩৬শ’ টাকা পেয়েছে। ফুল মোহাম্মদ আবার ছুটে আসে দোকান মালিক সুমনের কাছে। সুমন তাকে জানায় যা ভাতা এসেছে তাই পেয়েছেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে বাজারের স্থানীয় লোকজন আলহেরা দোকানে গিয়ে ফুল মোহাম্মদের একাউন্ট নং চেক করে দেখতে পায় ১৮ মে বিকেল ৫টা ১৮ মিনিটে ১ম বার ফুল মোহাম্মদের নগদ একাউন্ট থেকে আলহেরার নগদের উদ্যোক্তা সুমনের নাম্বারে ১৮১৪ টাকা ১৯ পয়সা ক্যাশ আউট করা হয় এবং পরে ঐদিন ৫টা ১৯মিনিটে একই নম্বরে ১৮শ’ টাকা ক্যাশ আউট করা হয়। কিন্তু সুমন ১৮শ’ টাকা ভাতাভোগীর হাতে দেন এবং বাকি ১৮১৪ টাকা ১৯ পয়সা সুমন কৌশলে আত্মসাৎ করেন। অবশেষে ভাতাভোগী ফুল মোহাম্মদ প্রতিকার চেয়ে গত ২৬ জুন উপজেলা সমাজসেবা অফিসে সুমনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। গত ৩০ জুন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্তে এসে অভিযোগের সত্যতা পান।
আলহেরা মোবাইল টেলিকমে কথা হয় সুমনের সাথে। কারও পিন কোডের সমস্যা হলে লোকজন আমার কাছেই আসে। ফুল মোহাম্মদের আগের টাকা ছিল, সেটা আমার জানা ছিল না। আমি ইচ্ছে করে করিনি, কোনো কারণে হয়তো আমার ভুল হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শামিম জানান, আমরা বহুদিন থেকে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শুনছিলাম। কিন্তু সঠিক কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না। এবার প্রমাণ পাওয়া গেল।
কোলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর ইসলাম স্বপন মুঠোফোনে বলেন, বয়স্ক ভাতার ২ কিস্তিতে ৩৬শ’ টাকা একাউন্টে জমা হয়েছে। সুমন ১ কিস্তির টাকা ভাতাভোগীকে দিয়ে আরেক কিস্তির টাকা তার মোবাইল একাউন্টে পার করে নিয়েছে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাজীব আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, ভাতাভোগী ফুল মোহাম্মদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে গিয়ে আমরা প্রাথমিকভাবে তার সত্যতা পেয়েছি এবং বিষয়টি নগদ একাউন্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নগদ কর্তৃপক্ষ আলহেরা এজেন্সি বাতিল করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।