স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলায় ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাওন পালকে।
সেইসাথে আসামি করা হয়েছে বেসরকারি পলিটেকনিক বিআইআইটি’র প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো: সাহাবুদ্দীন সৈকত ও আইআইটিবি’র পরিচালক ও দৈনিক দুরন্ত সংবাদের সম্পাদক সবুর শাহ লোটাসকেও।
‘ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের পর জাকি তাজওয়ারকেও আসামি করা হয়েছে। গত ২২ জুলাই রাতে জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা বাদি হয়ে ৮৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছেন।
মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাকে। ইতোমধ্যে পুলিশ হেনাকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলায় রেজাউল করিম বাদশা ও হেনা ছাড়াও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ ও বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পরিমল চন্দ্র দাস, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরশাদুল বারী এরশাদ এবং ১২,১৩ ও ১৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিরিন আকতারসহ বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর ৮৭ জনের নাম রয়েছে।
মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, এজাহারভুক্ত আসামিরা ছাড়াও অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জন আসামি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙ্চুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা এ সব কার্যালয়ে লুট করে। এছাড়া তারা টাউন ক্লাব ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনির বাণিজ্যিক কার্যালয়ে হামলা, লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে ৭১ ও ৮৭ নম্বর আসামি টাউন ক্লাবে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে আশ্রয় নেয়া ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মারধোর করেছে। মামলায় ১২ নম্বর আসামি করা হয়েছে জাকি তাজওয়ারকে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিনি।
কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সপ্তাহখানেক আগে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন এই ছাত্রনেতা। এ ছাড়া বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শহর যুবলীগের রহমাননগর আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক কাজলকে ৬৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি শহরের বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্স কমিটির সভাপতি।
মামলায় বগুড়ার বিআইআইটি নামে বেসরকারি পলিটেকটিক ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো: সাহাবুদ্দিন সৈকত ও আইআইটিবি’র পরিচালক সবুর শাহ লোটাসকেও। মামলার আসামি জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। কারণ একই ভবনে আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং আমাদের ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের কার্যালয় অবস্থিত।
হামলা এবং অগ্নিসংযোগে শুধু আওয়ামী লীগ অফিসই নয়, ছাত্র ইউনিয়ন এবং কমিউনিস্ট পার্টির অফিসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মামলার অভিযোগ দেখে তো মনে হচ্ছে, আমরা নিজেরাই নিজেদের অফিসে হামলা করেছি।’
ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাওন পাল বলেন, আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। এ সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। মামলার বাদি জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা বলেন, দলের উপ-দপ্তর সম্পাদক হিসেবে আমাকে বাদি করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিষয়ে দলীয় সভায় সিদ্ধান্তক্রমে নাম দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি মো: সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে লিখিত যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটিই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তকালে যাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে না তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।