গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : গোবিন্দগঞ্জের কামদিয়ার আদিবাসী সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র এখন সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। আদিবাসী সাঁওতালদের পরম্পরা ও ঐতিহ্যের ধারক আদিবাসী সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্রটি সাঁওতাল নৃগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক চাহিদা পূরণেও কাজ করছে।
সাঁওতাল বা আদিবাসীদের লোকজ সংগীত, তাদের নিজস্ব ভাষার আদি গান বিভিন্ন ধর্মীয় কল্পকথা, পারিবারিক ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের পরিবেশনায় রয়েছে ঐতিহ্যমন্ডিত অনেক পুরনো পরম্পরা। আদিবাসীরা আজও সেসব পালন করে থাকে। এসবই তাদের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।
তাদের সেসব পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাসকে ঘিরে প্রচলিত সংস্কৃতিকে বেগবান করতে কামদিয়ায় ঐ সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র স্থাপন করে। কামদিয়া ইউনিয়নের তেঘোরা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত এই আদিবাসী সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র, বর্তমানে আদিবাসীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
বাংলা ভাষা তেমন বলতেই পারতো না তারা এই সংস্কৃৃতি চর্চা কেন্দ্রের সংস্পর্শে এসে এখন বাংলা ভাষায় কথোপকথনে অভ্যস্ত হয়েছে। সংস্কৃৃতি কেন্দ্রে গিয়ে আদিবাসীদের ভাঙা ভাঙা বাংলা ভাষায় পরিচিতি প্রদান, শুভেচ্ছা বিনিময় ও কথোপকথন শিখেছে তারা।
সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের সাথে জড়িত ভায়রো স্যারন, পান্ডু মুর্মু, রজনী বাসকে, মনিকা সরেন, সান্তনা হাজদার জানান, এসকেএস থেকে এই সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রটি বানিয়ে দেবার পর এখন সাঁওতালরা এখানে নিয়মিত আসে। শুধু তাই নয় এই সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রটি তৈরি হবার ফলে এখানে বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠান হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলার কোনো কর্মকর্তা পরিদর্শনে এলে এই ঘরে বসে তাদের সাথে আলোচনা হয়। কোলাহল মুখর এই সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রে রয়েছে হারমোনিয়াম, তবলা-ডুগী, বাঁশি, ঢোল, খঞ্জনি, মন্দিরা, একতারা, দোতারাসহ নানা বাদ্যযন্ত্র। সাঁওতালদের গান এর ধরন কি বা পরিবেশনের ধরন কি, উপজীব্যই বা কি? এই চর্চাকেন্দ্রে এলে ধারণা পাওয়া যায়। আদিবাসী গ্রামের কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষ, সকলেই এই সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রে মিলিত হয়ে গল্প করে, পড়াশুনা করে, গান গায়, নাচ গানে মুখরিত করে তোলে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।