বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : আজ থেকে ১৬বছর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় জায়গা পেয়েছে দেশের চিকিৎসক এ আর খান বাংলাদেশে প্রথম জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথকীকরণ করে। সেই সাফল্যের ইতিহাস বীরগঞ্জের জোড়া লাগানো যমজ দুই বোন মনি-মুক্তার। সেই কারণে বিশ্ববাসী জানতে পেরেছে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা।
অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীতে বেড়ে ওঠা মনি-মুক্তা এখন ১৬বছরে পা দিয়েছে। তারা দু’জন স্থানীয় ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।
আজ বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট বাড়িতেই পালন করা হবে মনি-মুক্তার জন্মদিন।
প্রতি বছরের ন্যায় পরিবারের উদ্যোগে আত্মীয় স্বজন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মনি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী পালন করা হবে বলে জানান মনি-মুক্তার বাবা জয়প্রকাশ পাল।
তিনি আরও জানান, মনি-মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। লেখা-পড়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নাচ শিখছে। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ কিছু পুরস্কার অর্জন করেছে, পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ সুনাম অর্জন করেছে তারা।
জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মনি-মুক্তা বলেন, আমরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। দেশবাসীর দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের পুত্র জয় প্রকাশ পাল। জয় প্রকাশ পালের স্ত্রী কৃষ্ণা রাণী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মনি এবং মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়।
পরে রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ বোনকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শক্রমে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মনি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়।
অতঃপর ২০১০ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শিশু হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা লাভ করে। বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।