আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে জার্মানিতে এক সামরিক কর্মকর্তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা থমাস এইচ নামে পরিচিত এবং তিনি জার্মান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন।তিনি রাশিয়ার হাতে গোপন তথ্য তুলে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সোমবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার জন্য গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে এক জার্মান সামরিক কর্মকর্তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। থমাস এইচ নামে পরিচিত এই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর ক্রয় অফিসের ক্যাপ্টেন ছিলেন এবং সেসময় তিনি বার্লিনে রাশিয়ান দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেন এবং গোপন সামরিক তথ্য দিয়েছিলেন।বিবিসি বলছে, জার্মান পুলিশ গত বছরের আগস্ট মাসে তাকে কোবলেনজ শহরে গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ সিস্টেম এবং বিমান প্রযুক্তির ছবি অন্যদের কাছে শেয়ার করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে।
অবশ্য ৫৪ বছর বয়সী থমাস এইচ সোমবার ডুসেলডর্ফের একটি আদালতে রাশিয়াকে তথ্য দেওয়ার কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়াকে তথ্য দেওয়াটা ছিল ‘নির্বোধ কাজ’ এবং তিনি তার কর্মের জন্য অনুতপ্ত।তিনি আদালতকে বলেন, ‘এটি ছিল আমার জীবনে করা সবচেয়ে বড় বিশৃঙ্খল কাজ।’প্রসিকিউটররা বলেছেন, অভিযুক্ত এই সেনা কর্মকর্তা বার্লিনে রাশিয়ান দূতাবাস এবং বনের কনস্যুলেটে নিজ উদ্যোগে গিয়েছিলেন এবং ‘নিজেকে রাশিয়ার সেবায় নিয়োজিত করার বিষয়ে প্রায় ক্রমাগতভাবে প্রস্তাব করেছিলেন’।
তারা বলেছেন, লোকটি সংবেদনশীল সামরিক তথ্য সম্বলিত ফাইলের ছবি তুলেছে এবং সেগুলো বনের কনস্যুলেট ভবনে লেটারবক্সের মাধ্যমে পাঠিয়েছে।অবশ্য অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বলছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার পরই তিনি রুশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তার দাবি, জার্মানি ইউক্রেনে ভারী অস্ত্র সরবরাহ করলে সেটি দেশটিকে সংঘাতের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে বলে তিনি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ইউক্রেনে প্রায় ৬.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক হার্ডওয়্যার সরবরাহ করেছিল জার্মানি। এর মধ্যে ৪০টি লেপার্ড ১ ট্যাংক এবং ১০০টি পদাতিক সামরিক যানও অন্তর্ভুক্ত ছিল।অবশ্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর জার্মানিতে এই ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। গত বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ার কাছে গোয়েন্দা তথ্য প্রেরণের পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জার্মান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
জার্মান গোপনীয়তার নীতির কারণে সেসময় আটককৃত ওই ব্যক্তির নাম কেবল আর্থার ই বলে জানানো হয়। আর ওই ব্যক্তিকে জার্মান ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (বিএনডি)-এর এক কর্মচারীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হয়েছিল।
বিএনডি-এর সেই কর্মচারীকেও ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।