ভিডিও

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ তুলে শুরু হচ্ছে ইউরো

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ০৭:১৪ বিকাল
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৪, ১২:২৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ নিয়ে মাতামাতির শেষ নেই। ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলোর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের স্বাদ নিতে ভক্ত-সমর্থকদের ঘুম উধাও হয়ে যায়। এবার তার চেয়েও বড় পরিসরের ফুটবল যুদ্ধ হতে যাচ্ছে, এবার ক্লাব নয়, জার্মানির ১০টি ভেন্যুতে নেমে যাচ্ছে ২৪টি দেশ! তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ তুলে ‘ইউরোপের বিশ্বকাপ’ হিসেবে পরিচিত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের মাসব্যাপী আসরের পর্দা উঠছে শুক্রবার রাতে। সবার চোখ থাকবে মিউনিখে, বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক জার্মানি মুখোমুখি হচ্ছে বাছাইপর্বের চমক স্কটল্যান্ডের।

জার্মানির জন্য এই টুর্নামেন্ট শাপমোচনের উপলক্ষ। ঘরের মাঠ বলে কথা, এক দশক ধরে চলা মেজর ট্রফি খরা কাটানোর এই তো সুবর্ণ সুযোগ। ২০১৪ সালে ব্রাজিলের মারাকানায় আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। তারপর থেকে ব্যর্থতা যেন ঘাড়ে চেপে বসেছে। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়। মাঝে ২০১৬ ইউরোতে শেষ ষোলোর বাধা পার হতে পারেনি তারা। ২০০৬ সালের পর প্রথম কোনও বড় টুর্নামেন্টের আয়োজক তারা। এবার কি পারবে চতুর্থ ইউরো জিততে?

গত নভেম্বরে অস্ট্রিয়ার কাছে হেরে ২০২৩ শুরু করা জার্মানি এই বছর চার ম্যাচ খেলে অপরাজিত। ইউক্রেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র বাদে ফ্রান্স নেদারল্যান্ডস ও গ্রিসকে হারিয়ে ইউরোর প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। এবার মূল মঞ্চে নিজেদের জাত চেনানোর পালা।

আর প্রথম ম্যাচেই গ্রুপের সবচেয়ে নিচের র‌্যাঙ্কিংয়ে থাকা স্কটল্যান্ডকে পাচ্ছে জার্মানি। কিন্তু স্কটিশদের খাটো করে দেখার কোনও উপায় নেই। বাছাই পর্বে আট ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে হারা স্টিভ ক্লার্কের দল অঘটন ঘটাতে চায় শুরুতেই। 

‘এ’ গ্রুপে জার্মানি ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে অন্য দুটি দল হাঙ্গেরি ও সুইজারল্যান্ড। স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে জার্মানরা নিঃসন্দেহে ফেভারিট। এই টুর্নামেন্টে তিনটি শিরোপা জিতে স্পেনের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ সফল দল তারা। কিন্তু গ্রুপের বাধা পার করার পর একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে অকালেই ঝড়ে যেতে পারে দলটি। 
জার্মানির সঙ্গে এই ইউরোর ফেভারিটের দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন ও ইংল্যান্ড।

তিন বছর আগে ওয়েম্বলির ফাইনালে ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। শেষ তিনটি মেজর টুর্নামেন্টের সবগুলোতে অন্তত কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা ইংল্যান্ড এবার হট ফেভারিট। বড় ইভেন্টে ধারাবাহিকভাবে অল্পের জন্য সেরা সাফল্য অর্জন করতে না পারা ইংলিশরা এবার আটঘাঁট বেঁধে নামছে। তাদের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ঘোষণা দিয়েই ফেলেছেন, থ্রি লায়নদের সঙ্গে হয় এবারই শিরোপা জিতবেন, নয়তো বিদায় নিবেন। জুড বেলিংহ্যাম, হ্যারি কেন, ফিল ফোডেন আছেন ফর্মের তুঙ্গে। ঘরোয়া ফুটবলে তিনজনই ছিলেন আলোচিত পারফর্মার। ফোডেন ও বেলিংহ্যাম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও লা লিগায় হয়েছেন মৌসুম সেরা। অল্পের জন্য বুন্দেসলিগার মৌসুম সেরা হতে পারেননি কেন। বায়ার্ন মিউনিখে অভিষেকেই করেছেন সর্বোচ্চ ৩৬ লিগ গোল।

এই তিন তারকায় ভর করে ইংল্যান্ড অন্য দলগুলোর জন্য এবারের ইউরোতে সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠছেন। ‘সি’ গ্রুপে তাদের প্রথম ম্যাচ রবিবার সার্বিয়ার বিপক্ষে। এছাড়া ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে লড়াই করে গ্রুপের বাধা পার হতে হবে তাদের।

এবারের আসরে আরেক ফেভারিট দল ফ্রান্স। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করেছিল তারা। রাশিয়ায় শিরোপা জেতার চার বছর পর কাতারে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে রানার্সআপ হয় দলটি। দিদিয়ের দেশমের দল এবার খেলবে রিয়াল মাদ্রিদের নতুন চুক্তি কিলিয়ান এমবাপ্পের নেতৃত্বে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দুইয়ে থেকে তারা অংশ নিচ্ছে ইউরোতে। তাদের মিশন শুরু হবে অস্ট্রিয়া ম্যাচ দিয়ে। ‘ডি’ গ্রুপে তারা কঠিন বাধার মুখে পড়তে পারে পোল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে।

২০০৮ ও ২০১২ সালের টানা দুইবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন গতবার সেমিফাইনালে খেলেছিল। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালির শিরোপা ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জের। গত বিশ্বকাপে উঠতে ব্যর্থ হওয়া দলটি প্রত্যাশিতভাবে ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মিশনে নামবে। 

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে চমক দেখানো বেলজিয়াম দ্বিতীয় শীর্ষ র‌্যাঙ্কিংধারী ইউরোপিয়ান হিসেবে অংশ নিচ্ছে। গত দুটি বিশ্বকাপ ও ইউরোতে প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়ে অংশ নিয়েছিল তারা, কিন্তু অল্পের জন্য ব্যর্থতার গ্লানিতে ডুবতে হয়েছে দেশের ফুটবলের সোনালি প্রজন্মকে।

এছাড়া এবারের আসর মাতাবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। গত বিশ্বকাপের পরই তার শেষ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। কিন্তু তার নেতৃত্বেই আরেকবার ইউরো খেলতে যাচ্ছে পর্তুগাল। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও সম্ভাব্য শেষ ইউরোতে দ্বিতীয়বার শিরোপা হাতে নিতেই চাইবেন ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক। ইউরোর আগে সবশেষ ম্যাচে দুই গোল করে রোনালদো জানিয়ে দিয়েছেন, বয়স ৩৯ হলে কী হবে! সবার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিতে পারার সামর্থ্য এখনও তার আছে।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS